নানান জটিলতায় লাকসাম, শানিচোঁ ও বাগমারা এলাকায় ৭ কিলোমিটারের কাজ এখনো অসমাপ্ত কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪ লেন প্রকল্পের কাজ অবশেষে সমাপ্ত ঘোষণা!
ষ্টাফ রিপোর্টার\ অন্তত: ৩ বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো সত্তে¡ও অবশেষে ৭ কি.মি এলাকার কাজ বাদ রেখেই সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে ৪ লেনের কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। এমন খবর জানিয়েছেন, কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি কুমার চাকমা।
নির্বাহী প্রকৌশলী চাকমা আরো জানান, ‘বার বার প্রকল্পের মেয়াদ এবং ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আমাদেরকে শেষ বারের মত পুনঃরায় সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু নানান জটিলতায় মহাসড়কের লাকসাম, শানিচোঁ ও বাগমারা এলাকায় ৪ লেন প্রকল্পের কাজ স্থগিত হয়ে যাওয়ার কারণে আর সময় বৃদ্ধি না করে আমরা আপাতত প্রকল্পের কাজ বন্ধ ঘোষণা করেছি। তবে যে অংশে জটিলতা রয়েছে- সেগুলোর মেনটেইন্যান্স ব্যয় ধরে রেখেছি। জটিলতা কাটলেই আবার অসমাপ্ত কাজ শুরু করা হবে।’
প্রকাশ থাকে যে, বিগত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কুমিল্লা (টমছম ব্রিজ) থেকে নোয়াখালী (বেগমগঞ্জ) পর্যন্ত ২ লেনের সড়কটি একটি আঞ্চলিক মহাসড়ক হিসাবে ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের জন্য ২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সর্বমোট ৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ৪ লেন সড়ক নির্মাণ কাজের মেয়াদ প্রথমে ২০২০ সালের জুন মাস নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় পরে ২০২২ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। কিন্ত তাতেও প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। অত:পর, ৩য়: দফায় বর্তমান ২০২৩ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজে শেষ মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয়। কিন্ত এলাকাবাসীর দুর্ভাগ্যবশত: মহাসড়কের কাজ সমাপ্ত হয়নি।
এ প্রসঙ্গে সওজ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা আরো জানান, লাকসাম পৌরসভা এলাকায় ৪.৫ কিলোমিটার, শানিচোঁ এলাকায় ১.৮ কিলোমিটার এবং বাগমারা এলাকায় ১.৬ কিলোমিটার চারলেনে উন্নীত করনের কাজ অসমাপ্ত থেকে গেছে। তিনি বলেন, বাগমারার সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা চলছে; আমরা আশা করি সেখানে মহাসড়কের অসমাপ্ত কাজ দ্রæত সমাপ্ত করতে পারবো।
তবে, বর্তমানে কাজ অসমাপ্ত থাকা অবস্থায় এই মহাসড়ক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এখনো এ ব্যাপারে কোন পরিকল্পনা নেই।
বলা বাহুল্য, কুমিল্লা নোয়াখালী মহাসড়ক চারলেন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয়তা আসে ঢাকার সাথে নোয়াখালী লক্ষীপুর ও চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষের চলাচল সহজ করার লক্ষ্যে। এতে করেই সরকার এই প্রকল্পের অনুমোদন দেন এবং সে মোতাবেক মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু করা হয়। চরম যানজটের ভোগান্তি, যাতায়াতে সময় কমিয়ে আনা এবং পরিবহন খরচ কমানোর জন্য চারলেন প্রকল্পের যে পরিকল্পনা নিয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছিল- তা অসমাপ্ত এই ৭ কিলোমিটারের কারণে অসম্পূর্ণ অবস্থায়ই প্রকল্পের সমাপ্তি ঘোষণা করতে হচ্ছে। মূলত: যে অংশগুলোতে কাজ হয়নি তার মধ্যে বাগমারা ও লাকসাম এলাকায় প্রতিনিয়তই চরম যানজটের শিকার হচ্ছেন এই পথে চলাচলকারীরা। তবে অনেকেই অভিযোগে বলে থাকছেন, কি কারনে এবং কার কার খামখেয়ালীপনার দরুন দীর্ঘ ৩ তিনবার প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল বাড়ানো স্বত্তে¡ও আজ পর্যন্ত উক্ত মহাসড়কের ৭ কি.মি. এর নির্মান কাজ সমাপ্ত হয়নি? অবশেষে এ প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় এবং সাধারণ মানুষকে একটি মহাপ্রকল্পের পূর্নাঙ্গ সুবিধা ভোগের জন্য লাকসাম ও বাগমারা চার লেনের বাকি কাজ দ্রæত সমাপ্ত করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীরা আবারো জোর দাবী জানিয়েছেন।