মঙ্গলবার, ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পর্যালোচনা করে সাংবাদিকদের নতুন প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেয়া হবে

পর্যালোচনা করে সাংবাদিকদের নতুন  প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেয়া হবে
২১২ Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার॥ বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশে বিদ্যমান প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডগুলো পর্যালোচনা করে নতুন করে আবেদনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

            গত শনিবার (২৮শে ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

            বার্তায় বলা হয়, চলতি সপ্তাহে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তথা কী পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিবেচনায় অন্যান্য সকল বেসরকারি পাসের পাশাপাশি বর্তমান অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশও সীমিত করা হয়েছে। সরকার শিগগিরই বিদ্যমান প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডগুলি পর্যালোচনা করবে এবং নতুন অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ইস্যু করার জন্য তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) মাধ্যমে সকল স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে নতুন অ্যাক্রিডিটেশনের আবেদন আহ্বান করবে।

            এই সময়ে যেকোনো ইভেন্টের জন্য সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মিত অস্থায়ী অ্যাক্সেস কার্ড পাবেন বলে বার্তায় বলা হয়। বার্তায় আরো বলা হয়, সাংবাদিকদের সাময়িক এই অসুবিধার জন্য সরকার আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে।

            এর আগে গত শুক্রবার সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যুকৃত স্থায়ী প্রবেশ পাস এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ইস্যুকৃত অস্থায়ী প্রবেশ পাস ব্যতীত সব ধরনের অস্থায়ী (বেসরকারি ব্যক্তিবর্গের জন্য) সচিবালয় প্রবেশ পাসও বাতিল করে সরকার। এ নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

            সচিবালয়ে সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সরকারের অবস্থান আরো পরিষ্কার করেছেন প্রধান উপদেষ্টা উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। গত শনিবার সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার লিখেছেন, ‘কিছু লোক সরকারকে কঠোর হতে বলে আবার সামান্যতম কঠোর হলে গেল গেল রব তোলে। এই দ্বিচারিতা বন্ধ হওয়া জরুরি। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা নিয়ে যথারীতি এই দ্বিচারিতা আবার শুরু হয়েছে। প্রবেশাধিকার সীমিত করার এই সিদ্ধান্তটি খুবই সাময়িক।’

            তিনি বলেন, ‘একটা বিষয় এখানে পরিষ্কার করা দরকার, কোনো সাংবাদিকের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বাতিল করা হয়নি। কেবল সচিবালয়ের েেত্র এর ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। তাও খুবই অল্প সময়ের জন্য। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অস্থায়ী পাশ ইস্যু করা হবে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিগগিরই বিদ্যমান সব প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডই পর্যালোচনা করা হবে এবং নতুন অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যু করার জন্য সমস্ত স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের কাছে আবেদন চাওয়া হবে।’

            এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আজাদ মজুমদার আরও মন্তব্য করেছেন যে, ‘বাংলাদেশ সচিবালয়কে দালালদের হাটবাজার বানিয়ে ফেলা হয়েছিল।’

            সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করে আরও বলেন, ‘সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড সংক্রান্ত সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্তে দালাল ছাড়া কারও শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এটা সাংবাদিকদের কাজ আরো সহজ করবে। এখন সাময়িক অসুবিধা হলেও চূড়ান্ত বিচারে এটা সবাইকে সহযোগিতা করবে। এজন্যই সবার সহযোগতিা চাওয়া হচ্ছে।’

            প্রধান উপদেষ্টা উপ-প্রেস সচিব আরো উল্লেখ করেন যে, ‘সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে রাষ্ট্রের একটা বিপর্যয় হয়েছে এটা মানতে কারো দ্বিধা থাকার কথা নয়। এজন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও করা হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কখনো স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক, সেনাবাহিনীর বিষ্ফোরক বিশেষজ্ঞ দিয়ে একসাথে কোনো ঘটনার তদন্ত করা হয়নি।

            বর্তমান অন্তর্বতী সরকার স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী বলেই এই ধরনের কমিটি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের দূরে রেখে তদন্ত কাজ চালানো হবে বলে যারা আবোল তাবোল বকছেন এরা মারাত্মক ভুলে আছেন। আমাদের বিশ্বাস, সাংবাদিকরাও বিষয়টি উপলব্ধি করবেন এবং চলমান পরিস্থিতিতে সরকারকে সহযোগতিা করবেন।’

            উল্লেখ্য, এর আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া সচিবালয়ে প্রবেশের বেসরকারি সব পাস বাতিল করা হয়েছে। এমনকি সাংবাদিকেরাও অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দিয়ে সচিবালয়ে ঢুকতে পারবেন না। গত শুক্রবার (২৭শে ডিসেম্বর) রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর সই রয়েছে।

            প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির স্বার্থে সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যুকৃত স্থায়ী প্রবেশ পাস (উরমরঃধষ অপপবংং ঈড়হঃৎড়ষ ঝুংঃবস) এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ইস্যুকৃত অস্থায়ী প্রবেশ পাস ব্যতীত সব ধরনের অস্থায়ী (বেসরকারি ব্যক্তিবর্গের জন্য) সচিবালয় প্রবেশ পাস বাতিল করা হলো।

            এতে আরও বলা হয়, সাংবাদিকদের অনুকূলে ইস্যুকৃত অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দ্বারা সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এতদ্বারা বাতিল করা হলো। বাতিলকৃত বিভিন্ন ক্যাটাগরির সচিবালয় প্রবেশ পাসধারীরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ, ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার, ডিএমপি, ১৫ আব্দুল গণি রোড, ঢাকায় স্থাপনকৃত বিশেষ সেলের মাধ্যমে নতুন করে অস্থায়ী প্রবেশ পাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

            সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ জারি করা হলো বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। জবভ: রঃঃবভধয়

Share This