ভরা মৌসুমেও আলু পেঁয়াজের দাম চড়া
ষ্টাফ রিপোর্টার\ আলুর ভরা মৌসুম এখন। এর পরও দাম চড়া। সাধারণ ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছে আলু কিনতে। প্রতিবছর বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ শুরু হলে নতুন-পুরনো সব ধরনের আলুর দাম কমে যায়।
কিন্তু এবার পরিস্থিতি উল্টো। এক মাসের বেশি সময় ধরে বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ শুরু হলেও দাম কমছে না। খুচরা বাজারগুলোতে এখনো আলুর দাম মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ শুরু হওয়ায় আগের চেয়ে দাম কিছুটা কমেছে।
শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর থাকলেও ক্রেতাদের বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ, মুরগি, আদা, রসুনসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য।
গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। খুচরায় মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পুরনো আলুর সরবরাহ খুব কম। এই আলু মানভেদে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ মানভেদে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা। বাজারে এখনো পুরনো দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি।
রসুন এখনো উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা ও আমদানি করা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। আদা প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত চিনি ১৪৮ টাকা ও খোলা চিনি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৩ টাকা ও পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮৪৫ টাকা।
খুচরা ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পাইকারি বাজারে আলুর দাম কমছেই না। এতে আমরাও কমিয়ে বিক্রি করতে পারছি না। ভালো মানের নতুন আলু ৬৫ থেকে ৭০ টাকার নিচে বিক্রি করা যাচ্ছে না। মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৯০ টাকায় বিক্রি করছি। প্রতি ডজন ডিম আগের মতো ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।’
আলু ব্যবসায়ী মো. ফরিদ বলেন, ‘বাজারে নতুন আলু আসা শুরু হলেও সরবরাহ গতবারের তুলনায় কম। এতে আলুর দাম কমছে না। বাজারেও খুচরায় বড় আলু ৬০ টাকার নিচে বিক্রি করা যাচ্ছে না।’
কথা হয় হাবিবুর রহমান নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজারে এক থেকে দেড় মাস আগে থেকে নতুন আলু পাওয়া যাচ্ছে। এখন আলুর প্রচুর সরবরাহ থাকলেও দাম কমছে না। এক মাস আগেও ৭০ টাকায় আলু কিনতে হয়েছে, এখনো ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে আলুর দাম কমাচ্ছেন না এবার। তাই সরকারকে বাজার তদারকিতে নজর দিতে হবে।’
অন্যদিকে, বাজারে মুরগির চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এতে বাজারে গত এক সপ্তাহ ধরেই মুরগির দাম বাড়তি। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা।
সরবরাহ প্রচুর থাকলেও দাম কমছে না সবজির। বাজারে শীতের প্রচুর সবজির সরবরাহ থাকার পরও দাম কমছে না। এখনো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। মানভেদে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকায়। লম্বা বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও গোল বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও পাকা টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা। প্রতিটি লম্বা লাউ মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।