মনোহরগঞ্জের বিপুলাসারে মহাসড়কে ময়লার স্তÍুপ


এম এ মান্নান\ কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার বাজার এলাকায় মহাসড়কের উপর আবর্জনার স্তূপ দেখে মনে হবে- এটা মহাসড়ক নয়; যেন ময়লার ভাগাড়। কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে এমন চিত্র দেখে বিরক্ত স্থানীয় ও পথচারীরা।
মহাসড়কে ছড়িয়ে পড়ে আছে আবর্জনা। তীব্র দুর্গন্ধ ছড়ানো এসব ময়লার স্তূপের পাশ দিয়ে প্রতিদিন হাজারও যাত্রী, পথচারী ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নাক চেপে ধরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ পথে চলার সময় দুর্গন্ধ সইতে না পেরে অনেকে বমি করেছেন।
এছাড়া ময়লার স্তূপের আশপাশের দোকানগুলোতে ক্রেতারা না আসায় ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বাজারের ব্যবসায়ীরা বারবার কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও মিলছে না কোনো প্রতিকার।
সরেজমিন দেখা যায়, কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের বিপুলাসার বাজারের দক্ষিণে জায়গায় জায়গায় ময়লার স্তূপ। কোথাও আবার উপচে পড়ছে চলাচলের পথের উপর। দেখে মনে হয়, ভাগাড় যেন দখলে নিয়েছে মহাসড়ক। ময়লার স্তূপের ৫০ গজ দক্ষিণে রয়েছে তাহসিনুল কুরআন মাদরাসা, দুর্গন্ধে ওই মাদরাসায় শিক্ষার্থীরা নাক চেপে চলাচল করছে। ময়লার স্তূপের উত্তরে রয়েছে ৪টি বেসরকারি ব্যাংক, তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি হাসপাতাল।
রয়েছে শত শত দোকান, সড়কের পশ্চিম পাশে রয়েছে আহাম্মদ উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়, রেলস্টেশন, ইউনিয়ন পরিষদ ও সারি সারি খাবার হোটেল। বিপুলাসার বাজারে কোনো নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় মহাসড়কের পূর্ব পাশে সোনাইমুড়ী খালে আবর্জনা ফেলার কারণে অনেক আগেই ভরাট হয়ে গেছে খালটি।
সেই স্থানে উঁচু ময়লার স্তূপ হওয়ায় বর্তমানে সড়কে নিয়মিত ফেলা হচ্ছে বাসাবাড়ি, কলকারখানা ও বাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সব বর্জ্য। এতে রাস্তা সংকুচিত হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে উন্মুক্ত স্থানে ময়লা ফেলে রাখায় দুর্গন্ধ ও রোগ-ব্যাধির আশঙ্কায় এলাকাবাসী ও পথচারীরা।
বিপুলাসার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাজার পরিচালনা অস্থায়ী কমিটির সভাপতি শরীফ উদ্দিন বলেন, বিপুলাসার বাজারে কোনো নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় বছরের পর বছর পুরো বাজারের ময়লা এখানে ফেলা হচ্ছে। এ কারণে সড়কের বেহাল অবস্থা। এক লেনের সড়কের অর্ধেক ময়লা-আবর্জনার দখলে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এছাড়া এলাকার মাটি, পানি ও বাতাস দূষিত হয়ে উঠেছে। কয়েক মাস আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে; কিন্তু কোনো প্রতিকার এখনো পাইনি।
বাজার ব্যবসায়ী মোস্তফা মেম্বার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন তিনি নির্ধারিত স্থানে ময়লা ফেলার একটি ডাস্টবিন নির্মাণের জন্য বাজার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিছু টাকা তোলেন; কিন্তু ৫ই আগস্টের পর চেয়ারম্যান আত্মগোপনে থাকায় সেই কাজ করা হয়নি। এ কারণে সড়কের এ হাল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, সড়কের পাশে ময়লা ফেলার কারণে মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও স্থানীয় ইজারাদার ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই ময়লা অপসারণ ও ভবিষ্যতে আর যেন ময়লা না ফেলে সেই ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হবে।