লাকসাম-চৌদ্দগ্রাম সড়কের নাঙ্গলকোটের কাকৈরতলায় নির্মাণের ১ বছরের মধ্যে গার্ডওয়াল ভেঙ্গে পড়ছে পুকুরে
আবুল কাশেম গাফুরী\ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে উপজেলার বাঙ্গড্ডা ও পেড়িয়া ইউনিয়নের মধ্যে সংযোগকারী লাকসাম-চৌদ্দগ্রাম সড়কের কাকৈরতলা থেকে চেহরিয়া জামে মসজিদ পর্যন্ত সড়কটি নির্মাণের এক বছরে মধ্যে খানা-খন্দক সৃষ্টিসহ সড়কটি পুকুরের পাশের অংশ ভেঙে পড়ছে। এনিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সড়কটি নির্মাণে নিম্নমানের কাজসহ বিভিন্ন পুকুরের পাশে গার্ডওয়াল নির্মাণ ক্রটি এবং গার্ডওয়ালের পাশে মাটি না দেয়াকে দায়ী করছেন।
সরেজমিনে ও এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সড়কটির বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের কাকৈরতলা অংশে ঢুকতে দুলালের বাড়ির পিছনে একটি বড় ধরণের খানা-খন্দক দেখা যায়। এছাড়া সড়কটিতে নিম্নমানের ইটের টুকরা এবং ভালোভাবে কার্পেটিং না করায় শুরুতেই সড়কটির বিভিন্নস্থানে ছোট-বড় অনেক খানা-খন্দক দেখা যায়। বিশেষ করে সড়কটির রামেরবাগ অংশে হাফিজুর রহমানের পুকুরের পাশের বিশাল অংশজুড়ে সড়কটিতে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। পুকুরের পাশে পাড় থেকে অনেক নিচে গার্ডওয়াল নির্মাণ করায় এবং গার্ডওয়ালের পাশে মাটি না দেয়ায় সড়কটি প্রতিনিয়ত পুকুরে ভেঙে পড়ছে। পুকুরের দক্ষিণ পাশে একটি পুরনো কালভার্ট থাকলেও নতুনভাবে নির্মাণ না করে পুরনো কালভার্টটি ভেঙে ফেলা হয়। পরে কালভার্টের পুরনো রড দিয়ে ¯ø্যাব বানিয়ে পুরনো কালভার্টের উপর শুধুমাত্র ¯ø্যাব বসিয়ে আস্তর দেয়া হয়েছে।
এদিকে সড়কটির চেহরিয়া অংশে চেহরিয়া পশ্চিমপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন পুকুরে গার্ডওয়াল ঠিকভাবে নির্মাণ না করায় সড়কের পাশের মাটি ভেঙে পুকুরে পড়ছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার পকুরের গার্ডওয়াল ৫ ফুট উচ্চতায় করার কথা থাকলেও ৩ ফুট উচ্চতায় কাজ সম্পন্ন করে। এছাড়া গার্ডওয়ালের পাশে মাটি না ফেলায় সড়কের পাশের মাটি নিয়মিত ভেঙে সড়কটি পুকুরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সড়কটির চেহরিয়া অংশে ডাক্তার লুৎফুর রহমানের বাড়ি থেকে কেন্দ্রীয় মসজিদ পর্যন্ত বিভিন্নস্থানে ছোট-ছোট খানা-খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পেড়িয়া ইউনিয়নের চেহরিয়া জামে মসজিদ থেকে কাকৈরতলা সড়কটি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মা-মনি এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ২০২৩ সালের শেষের দিকে সড়কের কাজ শেষ হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
কাদবা গ্রামের হাফিজুর রহমান ছেলে মহিউদ্দিন বলেন, সড়কের পাশে আমাদের একটি পুকুর রয়েছে। সড়ক থেকে পুকুরের অংশে ১৫ ফুট ভরাট ছিল। ঠিকাদার গার্ডওয়ালের পাশে পুকুর থেকে মাটি নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। ওই সময় ঠিকাদারকে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে সে জানায়, গার্ডওয়াল করার পর মাটি ভরাট করে দেয়া হবে। পরে তারা গার্ডওয়ালের পাশে মাটি ভরাট না করায় সড়কটি পুকুরে ভেঙে যাচ্ছে এবং গার্ডওয়াল পর্যন্ত পুকুরে পড়ে গেছে। চেহরিয়া গ্রামের সরওয়ার আলম বলেন, সড়কটির আমার পুকুরের পাশে গার্ডওয়াল নির্মাণ কাজ ভালো হয়নি। গার্ডওয়াল নির্মাণ করলেও গার্ডওয়ালের পাশে মাটি ভরাট করে নাই। পরে প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয় করে আমাকে মাটি ভরাট করতে হয়েছে। নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম সিকদার বলেন, সড়কটি নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের জামানতের সময়কাল এখনো চলমান রয়েছে। এব্যাপারে ঠিকাদারকে চিঠি প্রদান করা হয়েছে। যাতে করে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সংস্কার করে দেয়া হয়।