শনিবার, ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অঙ্গীকার করতে হবেঃ -আলী রীয়াজ

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক  দলগুলোকে অঙ্গীকার করতে হবেঃ -আলী রীয়াজ
১৬ Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ সাংবাদিকদের কল্যাণে ও স্বাধীনতার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রতিশ্রæতি নিতে বলেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

            গত রোববার (৩১শে আগস্ট) গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সাংবাদিকদের এই আহŸান জানান। ডেইলি স্টার ভবনে বিবিসি মিডিয়া এ্যাকশনের সহযোগিতায় এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি)।

            রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রতিশ্রæতি নিতে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহŸান জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, রাজনীতিবিদরা যখন ক্ষমতায় যাবেন, তখন আপনাদের কাছেই তো আসতে হবে। তাদের ধরেন এখনই। তাদের জিজ্ঞেসা করেন, সাংবাদিকদের কল্যানে কি প্রতিশ্রæতি দিচ্ছে। এই অঙ্গীকারগুলো করতে বলুন।

            তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় যাওয়ার বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানই সুরক্ষা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে না। এর জন্য গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের দরকার হয় না।

            আলী রীয়াজ আরও বলেন, পেশাগত দায়িত্বের ক্ষেত্রে ওয়েজবোর্ডের প্রশ্নটা উঠে। অনেকে বলেছেন, ওয়েজবোর্ড তো বাস্তবায়ন হয় না, তাহলে ওয়েজবোর্ড করে লাভ কি? কোনো লাভ নেই। কেন হয় না ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন? কারণ, প্রতিষ্ঠানটি কোনোভাবেই ব্যবসায়িক লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়নি। একজন দোকানদার দোকান চালান, লাভজনক না হলে বন্ধ করে দেন। গণমাধ্যম মালিকরা লাভজনক না হওয়া স্বত্তে¡ও কেন গণমাধ্যম চালান? নিশ্চয়ই একটা কারণ থাকতে হবে। এই যে প্রতিষ্ঠানগুলো লাভজনক হবে কিভাবে- সেই প্রশ্নটা তুলুন।

            তিনি আরও বলেন, আপনাকে পেশাগত জায়গা থেকে যে সুবিধা দেয়ার কথা, অর্থাৎ দায়িত্ব পালনের জন্য যে সুযোগ তৈরি করে দেয়ার কথা চাকরি দেয়ার সাথে সাথে, সেই কাজটা মালিক করে না, কারণ মালিক জানে, আপনার সাথে এই আচরণ করার পরেও আপনি এই সরকার, রেজিম বা আদর্শকে সার্ভ করবেন অথবা আপনি থাকবেন। আর উনি (মালিক) এটা দিয়ে সুবিধা নেবেন। সেই কারণে মালিকানার যে ধরন তৈরি হয়েছে, সেটা অব্যাহত রেখে সংবাদপত্র বলেন, টেলিভিশন বলেন, রেডিও বলেন- স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করা দুরূহ।

            ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আরও বলেন, মব ভায়োলেন্সের সুবিধা সাংবাদিকদের মধ্যে কেউ কেউ পাচ্ছেন। ওমুককে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে, তমুককে অফিসে বসিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটছে না। পরের ওমুকটা যদি না থাকে, তাহলে আগের অমুকটা সাহস পাবে না।

            তিনি বলেন, যে দেশে নাগরিকদের আইনি সুরক্ষা নেই, বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়, গুম হয়, নিপীড়ন হয়, সেখানে আপনার একটা সাংবাদিকের আইডি কার্ড থাকবে, তাহলে কি আইনের সুরক্ষা পাবেন? এটা কি সম্ভব। আমার ধারণা সম্ভব না।

            বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সালেহউদ্দিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মিনহাজ উদ্দীন, সিনিয়র সাংবাদিক হাসনাইন খুরশেদ, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রেন সহ সভাপতি মুনিমা সুলতান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক মাইনুল সোহেল, বিজেসির ট্রাস্টি ও যমুনা টিভির সিইও ফাহিম আহমেদ, বিজেসির ট্রাস্টি পরিচালক তালাত মামুন, ট্রেজারার মানস ঘোষ।

            বিজেসির সদস্য সচিব ইলিয়াস হোসেন ও বিবিসি মিডিয়া এ্যাকশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আল মামুনের স্বাগত বক্তব্যে এবং ইলিয়াস হোসেন ও শাহনাজ শারমিনের সঞ্চালণায় আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজেসির নির্বাহী মিল্টন আনোয়ার।

Share This