শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শাক-সবজি ও মাছের মূল্যে হতাশ সাধারন মানুষ

শাক-সবজি ও মাছের মূল্যে হতাশ সাধারন মানুষ

            আবদুল মান্নান মজুমদার॥ দেশের হাট-বাজারগুলোতে শাক-সবজি-তরিতরকারি ও মাছের দাম অগ্নিমূল্য। সাধারণ মানুষ তো বটেই, বিত্তশালিদেরও ক্রয়-ক্ষমতা নাগালের বাইরে। তরিতরকারি কম উৎপাদন হওয়ায় আড়ৎ থেকে খুচরা ব্যবসায়িরা সব ধরনের শাক-সবজি কিনে বাজারে পণ্য বেচা কেনা করেন। এসব ব্যবসায়িরা সুযোগ বুঝে অতি লাভের আশায় প্রায়ই নিজের গুদামে কাঁচামাল মজুদ করেন, পরে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেন। এ দিকে বাজারে প্রয়োজনীয় মালামাল পাওয়া যায়না- এ কথা চর্তুদিকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পায়। আগে ১০০ টাকা দিয়ে ব্যাগ ভর্তি বাজার করতে পারলেও এখন ১০০ টাকা দিয়ে ১ কেজি সবজিও কেনা যায় না। এতে নিম্নআয়ের মানুষজন সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন।

            সরেজমিনে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু ৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, সিম ১৪০ টাকা, মূলা ৭০ টাকা, লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, জিংগা ৭০ টাকা, বাধাকপি ৭০ টাকা, ফুলকপি ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, কুমড়া ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করোলা ১২০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, জলপাই ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁচকলা ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির এমন আগুন দামে নিম্নআয়ের মানুষ ব্যাগ হাতে নিয়ে একটু কমমূল্যে কেনার জন্য দোকানের পর দোকান ঘুরতে থাকেন। এদিকে মাছ বাজারের একই অবস্থা। দেশি মাছ নেই বললে চলে। দেশিয় কিছু টেংরা ৩শ’ টাকা, কাকিয়া ৪শ’ টাকা, ছোট বাইম ৩শ’ টাকা, চিংড়ি ছোট ৮শ’ টাকা, বোয়াল ৮শ’ থেকে ১ হাজার, চাষের কাতলা, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া মাছের দাম এতো চড়া সপ্তাহে একদিন কিনা মুশকিল হয়ে পড়ে। এ যেন এক মরার ওপর খাড়ার ঘা।

            সাব্বির মিয়া, শামিম মিয়া, আহমদ আলী ও শায়েস্তা মিয়াসহ অন্তত অর্ধশত ক্রেতারা বলেন, শীতের সবজি বাজারে কম আসায় প্রত্যেকটি সবজির দাম আগুন। কিছু কৃষকরা আগাম সবজি ক্ষেত করলেও তারা বাজারে ন্যয্য মূল্য পাচ্ছেন না। কারণ কৃষকরা সবজি নিয়ে বাজারে আসলে পাইকাররা নানা অজুহাতে কম মূল্যে সবজি ক্রয় করে মজুদ রেখে অধিক মূলে বিক্রি করছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, শাক-সবজি ও মাছ বিক্রিতে সিন্ডিকেট আছে। কেউ কিছুটা কম দামে বিক্রি করতে চাইলে পাশে থাকা অপরজন বাধা দেয়। সর্বাবস্থায় মাছ, তরিতরকারি, শাক-সকজি কেনা এখন বড়ই মুশকিল। বাজারে প্রশাসনেরও কোন মনিটরিং নেই।

            ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করা মোসাহিদ আলী বলেন, প্রতি মাসে বেতন পাই ৭ হাজার টাকা। সংসারে লোক সংখ্যা ৫/৬জন। এমনিতেই নিত্যপণ্যের দাম বেশি। তাছাড়া মাসে সবজি কিনতে হয় আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকার। বাকি খরচতো রয়েই গেল। এতে করে ঋণগ্রস্ত থাকতে হয় পুরো বছর।

Share This