রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ডাকাতিয়ায় ব্রিজের ওপর ব্রিজ নির্মাণ     নাঙ্গলকোটে পানিবদ্ধতায় শত শত পরিবার

ডাকাতিয়ায় ব্রিজের ওপর ব্রিজ নির্মাণ নাঙ্গলকোটে পানিবদ্ধতায় শত শত পরিবার

Views

            তাজুল ইসলাম\ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ডাকাতিয়া নদীতে ব্রিজের ওপর ব্রিজ নির্মাণ করায় দীর্ঘদিন থেকে ভোগান্তিতে স্থানীয় অসংখ্য পরিবার। উপজেলার বাঙ্গড্ডা বাজার থেকে চৌদ্দগ্রাম যাওয়ার পথে ডাকাতিয়া নদীর ওপর পরিকোট গ্রামে নির্মিত ব্রিজটি দিন দিন নদীর আশপাশের শতাধিক গ্রামের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে।

১৯৬২ সালে আইয়ুব খান সরকারের আমলে দক্ষিণ কুমিল্লার মানুষের সুবিধার্থে বন্যার পানি অপসারণ ও কৃষি চাষাবাদ সহজলভ্যে এই নদীটি খনন করা হয়। নদীটি ছিল বড় বড় লঞ্চ ও মালবাহী ট্রলারের রুট। শুষ্ক মৌসুমে কৃষকরা ফসল আবাদের সময় এ নদী থেকে পেতেন পর্যাপ্ত পানি। ডাকাতিয়া নদী এ অঞ্চলের বহু মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস। দক্ষিণ কুমিল্লাসহ চাঁদপুরের মানুষের কাছে ডাকাতিয়া নদী আশীর্বাদ হলেও বর্তমানে এটি অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে নাঙ্গলকোট-চৌদ্দগ্রাম এই দু’উপজেলার সংযোজিত ব্রিজটি।

জানা যায়, তৎকালীন লাকসাম-চৌদ্দগ্রামের সংযোগ ব্রিজটি ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকারের আমলে নির্মিত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধারা পাক-হানাদার বাহিনীর আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর মৃত এনামুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে বোমা বিস্ফোরণ করে ব্রিজটি ভেঙে দেয়। স্বাধীনতার পর কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করে মানুষের চলাচল সহজ করে। পরে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে স্টিল ব্রিজ নির্মাণ করা হয়।

সর্বশেষ ২০১৫ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ব্রিজটি নিচে ফেলে দিয়ে তার উপর নতুন ব্রিজ নির্মাণ করেন। কিন্তু পূর্বের ব্রিজের মালামাল সরানো হয়নি। এতে ব্রিজের ওপর ব্রিজ নির্মাণ হওয়ায় পলি, আবর্জনা ও কচুরিপানা জমাট হয়ে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে নদীর আশপাশের শতাধিক গ্রাম প্ল­াবিত হওয়ার আশংকা করছে এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, পানি চলাচল স্বাভাবিক না থাকায় পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বিভিন্ন পুকুর ও প্রজেক্টের মাছ নদীতে চলে যাচ্ছে এবং চলাচলের রাস্তা ডুবে ভোগান্তিতে পড়ছে এসব গ্রামবাসী। বাঙ্গড্ডা ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে জানানো হলেও কোন সমাধান পাওয়া যায়নি। পানি চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ কুমিল্লা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছি। আশাকরি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সমস্যাটি সমাধান করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওলিউজ্জামান বলেন, আমাকে বিষয়টি সম্পর্কে কেউ অবগত করেনি। আগে থেকে জানলে সমস্যাটি সমাধান করা যেতো। তবে খোঁজ খবর নিয়ে সমস্যাটি সমাধান করা হবে।

Share This