শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রেমিকের ফোন নম্বর লিখে ট্রেনের  সামনে ঝাঁপ দেয় কলেজছাত্রী

প্রেমিকের ফোন নম্বর লিখে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেয় কলেজছাত্রী

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ নোটবুকে প্রেমিকের ফোন নম্বর লিখে কচটেপ মুড়িয়ে ছবিসহ পাথরচাপা দিয়ে এক কলেজছাত্রী ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে আত্মহত্যা করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাত ২টার দিকে লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি মুরাদ উল্লাহ ও কুমিল্লার রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে এসে কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে।

            প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাধবপুর এলাকায় বিকাল থেকে অজ্ঞাত এক মেয়ে রেল লাইনে ঘুরাঘুরি করছিল। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী  কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ঘটনাস্থলে আসলে ওই কলেজছাত্রী ট্রেনের সামনে দুই হাত তুলে দাঁড়িয়ে পড়েন। ট্রেনে কাটা পড়ে ওই কলেজছাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখে দূর থেকে তাকে ডাকাডাকি করে। কিন্তু কাছাকাছি এসেও তাকে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

            স্থানীয় কামরুল হাসান জানান, তারা এসে দেখতে পান দু’টি নোট বুক রেললাইন এর পাশে পাথর চাপা দিয়ে রেখেছেন। এতে একটি ছেলের নাম লেখা হৃদয় মুন্সী, পিতা হোসেন মুন্সী উপজেলা সাভার এবং তার ফোন নম্বর ও ছবি। মেয়ের জন্মনিবন্ধনপত্র। জন্মনিবন্ধনে দেখা যায়, ওই ছাত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ী গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে জান্নাত আক্তার। তিনি চারগাছ নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া ডিগ্রি কলেজের মানবিক শাখার ছাত্রী ছিলেন।

            এ সময় স্থানীয় যুবক নোটবুক থেকে হৃদয় মুন্সীকে ফোন দিয়ে ঘটনার বিষয়ে জানালে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। এর পর নিহত জান্নাতুল আক্তারের আত্মীয় স্বজনদের ফোন দিয়ে বিষয়টি  অবগত করানো হয়।

            নিহতের চাচাত ভাই রাজীব, ইয়াছিন ও আক্তার হোসেন জানান, জান্নাত আক্তারের কারো সঙ্গে সম্পর্ক ছিল কিনা বা আত্মহত্যার কারণ কি এবং যাকে দায়ী করেছে ওই ছেলেকে তারা তাকে চেনেন না। তবে জন্মনিবন্ধনপত্র যখন সঙ্গে করে এনেছে মনে হয় তাকে বিয়ে করার কথা বলে তার সাথে প্রতারণা করেছে। ওই ছেলের কারণে যদি আমার বোন আত্মহত্যা করে থাকে আমরা তার বিচার দাবি করছি।

তারা আরও বলেন, বুড়িচং মাধবপুর গ্রামে কোন আত্মীয়-স্বজন নেই। সে এখানে  কিভাবে আসলো এটাও রহস্যজনক।

            কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি নিহত কলেজছাত্রীর বাবা দরিদ্র কৃষক। তিনি সকালে কোচিং করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে সদর রসুলপুর স্টেশন নেমে বুড়িচংয়ের মাধবপুর এসে পৌঁছায়। আমরা আলামত জব্দ করেছি। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এ আত্মহত্যার পিছনে যারই প্ররোচনা থাক, দোষী প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share This

COMMENTS