শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১ হাজার  ৪৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১ হাজার ৪৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে (কুসিক) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৪৪ কোটি ৫০ লাখ ৮৩ হাজার ৪৬৪ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গত রোববার (৩০শে জুন) দুপুরে নগর ভবনের অতীন্দ্র মোহন রায় সম্মেলন কক্ষে বাজেট ঘোষণা করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনা। পরে বাজেটের বিস্তারিত উপস্থাপন করেন প্রধান হিসাব রক্ষক মো. মাসুদুর রহমান। এ সময় সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র হাবিবুর আল আমিন সাদী, মো. মঞ্জুর কাদের মনি, কাউছারা বেগম সুমিসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

            প্রস্তাবিত বাজেটে সিটি করপোরেশন এলাকার ভবন মালিকদের ওপর বাড়তি কর আরোপ করা হয়নি বলে জানান মেয়র। বিগত অর্থবছরের পরিমাণ অনুযায়ী কর আদায় করা হবে। তবে নিয়মিত কর পরিশোধের বিষয়টির দিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।            ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৭৯ কোটি ৪২ লাখ ৩৭ হাজার  টাকা এবং উন্নয়ন ও অনুদান আয় ধরা হয়েছে ৮৩৫ কোটি ৫৫ লাখ  টাকা। এ ছাড়া প্রারম্ভিক তহবিল দেখানো হয়েছে ১২৯ কোটি ৫৩ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬৪ টাকা।

            এদিকে, এবারের বাজেটে রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫৮ কোটি ৮৬ লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৩ টাকা। আর সমাপনী তহবিল দেখানো হয়েছে ৩১ কোটি ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮১ টাকা। বাজেটে নগরের অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনসহ উন্নয়নখাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশকনিধন, পানি সরবরাহ, বৃক্ষরোপণসহ সব খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে বেতন-ভাতা খাতেও।

            উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চলতি বছরের ৮ই এপ্রিল কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এটি তার প্রথম বাজেট। এর আগের মেয়র প্রয়াত আরফানুল হক রিফাতের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ছিল ৭১৮ কোটি ২১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ছিল ৩৪৪ কোটি ১২ লাখ ৩৬ হাজার ৬৬৩ টাকা। অতীতের সব বাজেটের চেয়ে এবারের বাজেটের আকার বেড়েছে। গেলবারের মতো এবারও বাজেট উন্নয়ন অনুদানের ওপর নির্ভরশীল।

বাজেট ঘোষণাকালে সিটি মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনা বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরেই গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশন কুমিল্লা। জাইকাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা কুমিল্লার উন্নয়নে কাজ করতে চান। আমরা তীব্র গতিতে কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে কুমিল্লার মানুষ এর সুফল ভোগ করছেন। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে কুমিল্লার কোথাও তেমন জলাবদ্ধতা তৈরি হয়নি। এমন ঘটনা নজিরবিহীন। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করেছি, খালগুলো পরিষ্কার করেছি। কোরবানির বর্জ্য দ্রæত অপসারণ করেছি। কুমিল্লার মানুষ সেবা পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। যানজট, জলজট নিরসনে আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছি। নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনে কাজ করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি সড়ক বিভাজকে বৃক্ষরোপণের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হবে।

            মেয়র বলেন, নগরীর মানুষ গণশৌচাগার সঙ্কটে দুর্ভোগে পড়েন। নারীরা ঝামেলায় পড়েন বেশি। আমাদের পর্যাপ্ত জায়গাও নেই। নগরীর পরিত্যক্ত ভবন উচ্ছেদ করে সেখানকার আন্ডারগ্রাউন্ডে গণশৌচাগার করার প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। যানজট নিরসনে অবৈধ পরিবহনের প্রতি ব্যবস্থা, ফুটপাত দখলমুক্ত করতে জোরালোভাবে কাজ করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে নগরীকে দূষণমুক্ত রাখতে কাজ করা হবে। সেবাকে ত্বরান্বিত করতে লোকবল বাড়ানো হবে। কাজ করা হবে শিক্ষার প্রসার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে।

Share This

COMMENTS