সোনাইমুড়ীতে বন্যাদুর্গতদের মাঝে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিভিন্ন সংগঠনের ত্রাণ বিতরণ

নিজস্ব প্রতিনিধি\ নোয়াখালীর চাটখিল-সোনাইমুড়ী অঞ্চলের কয়েক লাখ পানিবন্দি মানুষের পাশে আর্থিক সাহায্য, ত্রাণ সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও চাটখিল-সোনাইমুড়ী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ দেশের বিত্তবান, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও মানবিক সংগঠনসমূহ।
মৌসুমী ভারী বৃষ্টিপাত ও পার্শ্ববর্তী ফেনী জেলার পানি প্রবাহে ২০শে আগস্ট থেকে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী-চাটখিল উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল প্লাবিত হয়ে মারাত্মক বন্যা দেখা দেয়। এতে জেলার হাজার হাজার বাড়িঘরে পানি উঠে ও কয়েক লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়ে। অনেকেই ভিটেমাটি ছেড়ে প্রাণ রক্ষায় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ করে। স্থানীয় ও প্রবাসীরা বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ সহায়তার জন্য ফান্ড গঠন করে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শত শত শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে পানিবন্দি দুর্গতদের সেবা, খাবার সরবরাহ ও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা দলমত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দুর্গতদের জরুরি ত্রাণ সেবা সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে উদ্ধার করে নিয়ে আসছে। স্থানীয় সমাজসেবীরা নগদ টাকা, খাবার, সুপেয় পানি ও ওষুধসামগ্রী সংগ্রহ করে বিভিন্ন বন্যাদুর্গত আশ্রয় শিবিরে বিতরণ করছে। এ ছাড়াও সরকারি উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। দুর্গতদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহে মানবিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। ইতিমধ্যে সোনাইমুড়ী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, আলীয়া মাদ্রাসা, সোনাইমুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিসমিল্লাহ ভবন, মিনহাজ উদ্দিন, বিসমিল্লাহ কোম্পানির মাদ্রাসা, নওয়াবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়াগ মহাবিদ্যালয়, আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ ভবনসহ চাটখিল-সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া মানুষদের মাঝে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রতিদান ফাউন্ডেশন, বরলা আল খিদমা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ নূরানী তালীমুল কোরআন বোর্ড ট্রাস্ট, সেবা ফাউন্ডেশন, লায়ন্স ক্লাব, রোটারি ক্লাব, ওয়ান ৯৯ ক্লাব ঢাকাসহ উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ আশ্রয় শিবিরগুলো ও দুর্গত অঞ্চল পরিদর্শনসহ ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন।
উপজেলার বজরা এলাকার আলী মিয়া (৯৮) জানান, আমার বয়স প্রায় শত বর্ষের কাছাকাছি, আমার বুঝ জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বহুবার ঢল (বন্যা) দেখেছি। তবে এবারের মতো মারাত্মক ঢল কখনো হয়নি। নোয়াখালী ব্লাড ফাউন্ডেশনের সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, পানিবন্দি মানুষের কষ্ট দেখে এলাকার বিভিন্ন বিত্তশালী থেকে টাকা তুলে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। যতদিন বন্যা থাকবে ততদিন চেষ্টা অব্যাহত রাখবো।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা জানান, ইতিমধ্যে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও পানিবন্দি লোকদের উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তায় উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহ একত্রে কাজ করে যাচ্ছে। পানিবন্দি লোকদের চিকিৎসাসেবা ও খাবার সরবরাহে কোনো রূপ অসুবিধা যেন না হয় সেজন্য উপজেলা স্কাউট্স দল, স্বেচ্ছাসেবক ও সমাজসেবীরা সুচারুভাবে মানবিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে শুষ্ক খাবার, সুপেয় পানি ও জরুরি ওষুধ সরবরাহে সার্বক্ষণিক তদারকি, খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। সরকারি ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে উপজেলার বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান।