রবিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রোমে বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

২০ Views

অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার রোমে অবস্থিত (বাংলাদেশ দূতাবাস) বাংলাদেশ হাউস পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় তিনি সেখানে রাখা পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য জানান।

রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূস বর্তমানে ইতালিতে অবস্থান করছেন।

আজ শনিবার ভ্যাটিকান সিটিতে পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে। পোপের সমাধিটি বেশ সাধারণ হওয়ার কথা থাকলেও এর ওপরে থাকা ব্যাসিলিকাটি (বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন গির্জা) বেশ ঐশ্বর্যমণ্ডিত।

প্রাচীন রোমের সাতটি পাহাড়ের একটি এস্কুইলাইনের চূড়ায় এই ব্যাসিলিকার অবস্থান। রোমের চার পোপীয় ব্যাসিলিকার একটি এটি। এই গির্জার ২৪৬ ফুট লম্বা বেল টাওয়ারের চূড়া রোমের সর্বোচ্চ বিন্দু।

কথিত আছে, চতুর্থ শতাব্দীতে তৎকালীন পোপ লিবারিয়াস ও স্থানীয় এক ধনকুবেরের স্বপ্নে এসে মাদার মেরি তার সম্মানে একটি গির্জা নির্মাণ করতে বলেন।

মেরি আরও বলেন, গির্জা নির্মাণের স্থানটি অলৌকিকভাবে তাদের কাছে ধরা দেবে। এরপর ৩৫৮ খ্রিস্টাব্দের আগস্টে গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহের মধ্যে এস্কুইলাইনের চূড়ায় তুষারপাত হয়। পোপ ও সেই ধনকুবের ধরে নেন, এখানেই গির্জাটি বানাতে হবে। এ ঘটনার স্মরণে এখনো সেন্ট মেরি মেজরে প্রতিবছর ৫ আগস্ট ‘মিরাকল অব দ্য স্নো’ উদযাপিত হয়।

জানা যায়, পোপ ফ্রান্সিসের কাছে সান্তা মারিয়া মাজ্জোরে বেশ পছন্দের ছিল। প্রায় রোববারই তিনি সেখানে গিয়ে মাদার মেরিকে সম্মান জানাতেন। প্রতিটি বিদেশ সফরের আগে ও পরে, এমনকি হাসপাতাল থেকে ফেরার পরও তিনি এই গির্জায় এসে প্রার্থনা করতেন। এ গির্জার মাদার মেরির প্রতিকৃতিকে যিশুমাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিকৃতি হিসাবে দেখা হয়। তার সামনে গিয়ে যাত্রাপথের ও সার্বিক সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করতেন পোপ।

এর আগে আরও সাতজন পোপ এই ব্যাসিলিকায় সমাহিত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সর্বশেষজন ছিলেন নবম ক্লেমেন্ট, ১৬৬৯ সালে। ভ্যাটিকানের বাইরে সর্বশেষ শায়িত পোপ হচ্ছেন ত্রয়োদশ লিও। ১৯০৩ সালে তার মৃত্যুর পর সব পোপই সমাহিত হয়েছেন ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায়।

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতালির রোমে পৌঁছেছেন। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি রোমে পৌঁছায়। সেখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান। এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কাতারের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ২৫ মিনিট) রোমের উদ্দেশে রওয়ানা দেন।

শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস যোগ দেবেন। রোববার সকাল ৮টার দিকে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা) লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি রোম ফিউমিসিনো বিমানবন্দর থেকে দেশের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন এবং সোমবার ভোরে ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এই শোক পালন করা হচ্ছে।

পোপের শেষকৃত্যে লাখ লাখ মানুষ ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ওয়েলসের প্রিন্স (প্রিন্স উইলিয়াম), ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারম্যান উরসুলা ভন ডার লিয়েন প্রমুখ।

Share This

COMMENTS