শনিবার, ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অস্তিত্ব সংকটে মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদে ‘মহেন্দ্র খাল’

অস্তিত্ব সংকটে মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদে ‘মহেন্দ্র খাল’
Views

            হুমায়ুন কবির মানিক\ কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদে ঐতিহ্যবাহী মহেন্দ্র খাল এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। একসময় যেখান দিয়ে স্বাভাবিকভাবে পানি প্রবাহিত হতো, আজ সেখানে গড়ে উঠেছে পাঁচতলা মার্কেটসহ বহু স্থায়ী অবকাঠামো। কেউ খালে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে, কেউ আবার অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে বানিজ্যিক ভাড়া দিচ্ছে- সবমিলিয়ে খালটি যেন দখলবাজদের সম্পত্তিতে রূপ নিয়েছে।

            এর ফলে বর্ষা এলেই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বসতবাড়ি, মাছের ঘের ও ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে পানির নিচে। সাধারণ মানুষের চলাফেরা, জীবনযাপন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।

            স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলা দখল প্রক্রিয়ায় প্রশাসনের একাংশের মদদ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কিছু জায়গায় ভূমি অফিস নিজেরাই খালের জায়গা লিজ ও ইজারা দিয়ে দখলকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে।

            স্থানীয় লোকজন বলেন, “খাল রক্ষায় কেউ মুখ খুললেই তার ওপর আসে নানাবিধ চাপ। অনেকেই ভয়-ভীতির কারণে চুপ করে থাকেন। অথচ ক্ষতিটা হচ্ছে সাধারণ মানুষের।”

            প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের দাপটে দখলবাজরা দিনে দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ খালের ওপর ব্যবসা করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। অথচ খাল হারিয়ে মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগে।

            খাল সংস্কার ও পুনরুদ্ধারে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি কৃষি ও জনজীবনে বড় বিপর্যয় নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞমহল।

            এলাকাবাসীর জোর দাবি- হাসনাবাদের মহেন্দ্র খালের ওপর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে পানি চলাচলের পথ ফিরিয়ে দিতে হবে এবং এই কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

            এ বিষয়ে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, বিষয়টি জেনেছি। বৃষ্টির কারণে সরেজমিনে মাপা যায়নি। দু-এক দিনের মধ্যে আমরা খালের জায়গা পরিমাপ করবো। সরকারি খালের জায়গায় কেউ স্থাপনা তৈরি করলে উচ্ছেদসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share This

COMMENTS