অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের লক্ষ্যে বঙ্গভবনে সেনাপ্রধানের বৈঠক অনুষ্ঠিত
ছবি: সংগৃহীত
—
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের লক্ষ্যে বঙ্গভবনে সেনাপ্রধান, নৌপ্রধান ও বিমান বাহিনীর প্রধান এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৫ই আগস্ট (সোমবার) রাতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে।
বঙ্গভবন থেকে পাঠানো এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এবং সম্প্রতি বিভিন্ন মামলায় আটককৃত সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন কোনভাবেই বিনষ্ট না হয় সে ব্যাপারেও সভায় ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
সভায় কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গ্রহীত হয় এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করা হয়। পাশাপাশি অনতিবিলম্বে একটি অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্তও হয়।
এ সভায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে সকলকে ধৈর্য ও সহনশীল আচরণ করার আহ্বান জানানো হয় এবং সেনাবাহিনীকে লুটতরাজ ও হিংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় প্রতিনিধিদলে ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী দল (বিএনপি)’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টির জি এম কাদের, মজিবুল হক চুন্নু ও আনিসুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, হেফাজত ইসলামের মামুনুল হক, মুফতি মনির কাসেমী ও মাহাবুবুর রহমান, জামায়াতে ইসলামের ড. শফিকুর রহমান ও শেখ মোঃ মাসুদ, মেজর জেনারেল ফজলে রাব্বি (অবঃ), জাকের পার্টির শামিম হায়দার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের জুনায়েদ সাকী, জাকের পার্টির শামিম হায়দার, গণ-অধিকার পরিষদের অ্যাডভোকেট গোলাম সারওয়ার জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, ফিরোজ আহমদ এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল হোসাইন, আরিফ তালুকদার, ওমর ফারুক ও মোবাশ্বেরা করিম মিমি এবং ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আনিছুর রহমান।
এছাড়া, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সদ্য পদত্যাগ করা শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল। ৫ই আগস্ট (সোমবার) ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছের গাজিয়াবাদে (উত্তর প্রদেশ) সেনাবাহিনীর হিন্দন বিমানঘাঁটিতে শেখ হাসিনার হেলিকাপ্টারটি পৌঁছালে সেখানেই শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন অজিত দোভাল।
এ ব্যাপারে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অবহিত করেন করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ ছাড়া দেশটির লোকসভার বিরোধী দলের নেতা এবং কংগ্রেসের সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধীও এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করেছেন। কংগ্রেস সূত্র জানিয়েছে, এই দুই নেতা বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করে যুক্তরাজ্যও। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের একজন মুখপাত্র এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র লন্ডনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিগত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে আমরা যে সহিংসতা দেখেছি, তাতে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার গভীরভাবে শোকাহত।’
মুখপাত্র আরো বলেন, ‘(বাংলাদেশের) গণতন্ত্র সুরক্ষার জন্য এবং দেশের মানুষের নিরাপত্তার ও শান্তিপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আমি আশা করি।”