বৃহস্পতিবার, ২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

<span class="entry-title-primary">অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু;</span> <span class="entry-subtitle">আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের  দায়িত্ব গ্রহণের আগেই অভিযান ‘আতঙ্ক’</span>

অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু; আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের আগেই অভিযান ‘আতঙ্ক’

১০০ Views

            জান্নাতুল ফেরদৌস পুস্প॥  নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতার মসনদে বসবেন ২০শে জানুয়ারি। কিন্তু তারআগেই ওয়ার্মআপ শুরু করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। বিশেষ করে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু করেছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)। কোথাও কোথাও সাদা পোশাকে তারা অভিযান চালাচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে ডিপোর্টেশন অর্ডার এবং ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে, প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের আটক করা হচ্ছে।

           খবরে উল্লেখ করা হয়েছে যে,  U.S. House approves legislation to deport undocumented immigrants charged iwth minor crimes!

            The proposal requires immigration authorities to hold and deport immigrants charged iwth crimes like burglary, theft, larceû or shoplifting. The bill nwo goes to the Senate hwere Republicans hold the majority. BY URIEL J. GURCIA, JAN. 7, 2025.

            Caption: The U.S. House on Tuesday passed a bill that owuld require the deportation of undocumented immigrants for minor crimes. The bill nwo moves to the U.S. Senate. Credit: REUTERS/ *Kevin Lamarque*

            That is ÔIbarraÕ aws convicted in RileyÕs killing and aws sentenced to life in prison iwthout the possibility of parole in November.

            The death of Laken Riley aws a senseless and preventable tragedz, and nwo that her murderer is behind bars, we owe it to Laken to do everything we can to ensure aû migrant hwo enters the country illegally and commits a crime is never given the opportunity to harm innocent Americans,Ó U.S. Sen. John Corûn of Texas said in a statement.

            Even though studies shwo that recent immigrants in the United States commit crimes at a loewr rate than U.S.-born citiæens, RileyÕs murder became a rallying cry for conservative lamwakers to adopt stricter immigration lasw.

            According to an analysis by Alex Norwasteh — the vice president for economic and social policy studies at the libertarian think tank Cato Institute — undocumented immigrants in Georgia are incarcerated for homicide at a rate of 61 per 100,000 people, compared to 90 per 100,000 for legal immigrants and U.S. citiæens.

            অর্থাৎ ওই রিলির হত্যাকান্ডে ইবারাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং নভেম্বরে প্যারোলের সম্ভাবনা ছাড়াই তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছিল।

            “লেকেন রিলির মৃত্যু একটি বুদ্ধিহীন এবং প্রতিরোধযোগ্য ট্র্যাজেডি ছিল, এবং এখন যেহেতু তার খুনি কারাগারের আড়ালে রয়েছে, আমরা লেকেনের কাছে ঋণী যে আমরা যা করতে পারি তা নিশ্চিত করার জন্য যে কোনও অভিবাসী অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করে এবং অপরাধ করে তাকে কখনই সুযোগ দেয়া হবে না। নিরপরাধ আমেরিকানদের ক্ষতি করার জন্য,” টেক্সাসের মার্কিন সেন জন কর্নিন এক বিবৃতিতে বলেছেন।

            যদিও গবেষণাগুলো দেখায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক অভিবাসীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী নাগরিকদের তুলনায় কম হারে অপরাধ করে, রাইলির হত্যাকান্ড রক্ষণশীল আইন প্রণেতাদের জন্য কঠোর অভিবাসন আইন গ্রহণের জন্য একটি সমাবেশের কান্নাকাটি হয়ে উঠেছে।

            তাছাড়া, অ্যালেক্স নওরাস্তেহ-এর বিশ্লেষণ অনুসারে- স্বাধীনতাবাদী থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ক্যাটো ইনস্টিটিউটের অর্থনৈতিক ওসামাজিক নীতি অধ্যয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট- জর্জিয়ার অনথিভুক্ত অভিবাসীরা প্রতি ১০০,০০০ জনে ৬১% হারে নরহত্যার জন্য বন্দী, যেখানে আইনি অভিবাসীদের জন্য প্রতি ১০০,০০০ জনে ৯০% এর তুলনায় এবং মার্কিন নাগরিক।

            এদিকে, নিউইয়র্ক সিটিও অবৈধ অভিবাসীদের জন্য আর নিরাপদ স্থান নয়! সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক সিটির উডহ্যাভেন ও গ্র্যান্ড অ্যাভিনিউ এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। অনেকে এ খবর পোস্ট করে অন্যদের সতর্ক করেছেন।

            নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবাসী বাংলাদেশি জানিয়েছেন, তার ভাই ৩০ লাখ টাকা খরচ করে দালালের মাধ্যমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। চার বছর ধরে এই দেশে আছেন। কিন্তু বৈধ হতে পারেননি। এখন গ্রেপ্তারে ঝুঁকি এড়াতে গত ২রা জানুয়ারি বাংলাদেশে চলে গেছেন। তিনি জানান, তার ভাইয়ের দুই জন রুমমেটকে সাদা পোশাকের মানুষ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। তার ভাই ওইসময় বাসার বাইরে ছিলেন। এ কারণে তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে পেরেছেন।

            আরেকদিকে, গত ৭ই জানুয়ারি মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ একটি আইন পাস করেছে, যা অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কারের জন্য লক্ষ্য স্থির করেছে। এমনকী যদি কোনো অবৈধ অভিবাসী দোকান থেকে চুরি করার মতো অসহিংস অপরাধের জন্য অভিযুক্ত হয়, তাদেরকেও বহিস্কার করা হবে।

            লেকেন রাইলি অ্যাক্ট ২৬৪-১৫৯ ভোটে পাস হয়, যেখানে ৪৮ জন ডেমোক্র্যাট সদস্যও রিপাবলিকানদের সাথে যোগ দেন।এর মধ্যে টেক্সাসের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি হেনরি কুয়েলার এবং ভিসেন্টে গনজালেস রয়েছেন। প্রস্তাবিত আইনটি এখন শুক্রবার সিনেটে যাবে, যেখানে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। রিপাবলিকানদের ৫৩টি আসন রয়েছে এবং বিলটি পাসকরার জন্য সাতজন ডেমোক্র্যাট সিনেটরের সমর্থন প্রয়োজন।

            বিলটির নামকরণ করা হয়েছে লেকেন রাইলির নামে। ২২ বছর বয়সী অগাস্টা ইউনিভার্সিটির একজন নার্সিং ছাত্রি, যাকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হত্যা করা হয়েছিল হোসে আন্তোনিও ইবার্রা নামে ২৬ বছর বয়সী একজন ভেনেজুয়েলা নাগরিকদ্বারা, যিনি ২০২২ সালে এল পাসো হয়ে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন।

            হত্যার কয়েক মাস আগে, ইবার্রা জর্জিয়ার একটি ওয়ালমার্টে দোকান থেকে চুরি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তবেপরে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। ইবার্রা রাইলির হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয় এবং নভেম্বরে তাকে প্যারোল ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়।

            এক গবেষণায় দেখা গেছে- যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করা নাগরিকদের তুলনায় কম অপরাধ করে। রাইলির হত্যাকান্ডটি রক্ষণশীল আইন প্রণেতাদের মধ্যে কঠোর অভিবাসন আইন প্রণয়নের জন্য এক বিরাট স্লোগান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

            অপরদিকে, নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্নর ক্যাথি হোকুল ডিসেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কোনো ইমিগ্র্যান্ট যদি আইন ভঙ্গ করে, তাহলে আমিই প্রথম-  যে ফোন করবে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, তিনি আইন মান্যকারী যেসব আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্ট বছরের পর বছর বা কয়েক দশক ধরে এ দেশে বাস করছেন এবং এ দেশে নিজেদের জীবন নিজেরাই গড়ে তুলেছেন, তিনি তাদের রক্ষা করবেন। এ ব্যাপারে তিনি ফেডারেল কর্মকর্তাদের সাথেও কথা বলবেন।

            দ্য সিটিতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়- ডিসেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কথা বলছিলেন সাংবাদিকদের সাথে। গভর্নর নিউইয়র্ক সিটির যেসব আইন রয়েছে আনডকুমেন্টেড ইমিগ্র্যান্টদের জন্য স্টেট পর্যায়ে তার কার্যকারিতা তুলে ধরে বলেন, আমাদের স্যাংচুয়ারি পলিসিতে পার্থক্য রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইস) কর্মকর্তাদের সাথে কাজ শুরু করেছি। আমরা বলেছি যাদের বিরুদ্ধে ক্রাইমের অভিযোগ রয়েছে তাদের রিমুভ (ডিপোর্ট) করার কথা বলেছি। তিনি বলেন ইমিগ্রেশন বিষয়ে ফেডারেল সরকারের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে স্টেটের কোনো বিধিনিষেধ নেই।

            দ্য সিটি বলছে, স্টেটের অ্যাসেম্বলি সদস্য সিনেটররা গভর্নর হোকুলের সাথে একমত নন। তারা ইতিমধ্যেই ফেডারেল এজেন্টদের সাথে স্টেটের সহযোগিতার বিষয়টি কমিয়ে আনতে আইন পাশে এগিয়ে যাচ্ছেন। যেমন ২০১৭ সালে গভর্নর এ্যান্ড্রু কোমো নির্বাহী আদেশ ১৭০ এ স্বাক্ষর করেন। যাতে বলা হয় ‘নিউইয়র্ক এম্পায়ার স্টেট হওয়ার কারণ পৃথিবীর প্রতিটি এলাকা থেকে ইমিগ্র্যান্টদের অবদান রয়েছে এই স্টেটের গড়ে ওঠার পিছনে। তাদের অবদান স্বীকার করতে হবে। আমরা কখনোই চাই না রাজনৈতিক ভীতি আমাদের বিভক্ত করুক।

দ্য সিটি বলছে, উক্ত এক্সিকিউটিভ অর্ডার এখনো বলবত আছে। এই আদেশ অনুযায়ী স্টেটের পুলিশ এবং স্টেটের অন্য কর্মচারীরা ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কোনো খবর ফেডারেল কর্মকর্তাদের দিতে পারবে না। উক্ত এক্সিকিউটিভ অর্ডার অনুযায়ী, এমন কি স্টেটের কোনো কর্মচারী কাউকে তার ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস সম্পর্কে প্রশ্নও করতে পারবে না। তবে কোনো ইমিগ্রান্ট যদি কোনো অবৈধ কাজ করে বা ক্রাইম করে তখন পুলিশ তার ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে পারবে। কেউ একজন কেবল আনডকুমেন্টেড হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে পুলিশি অ্যাকশন নেয়া যাবে না।

            অবশ্য ফেডারেল ইমিগ্রেশন এজেন্টরা কেবল তখন গ্রেফতার করতে পারবে স্টেটের কোনো ফ্যাসিলিটি থেকে যদি তাদের কাছে জুডিশিয়াল ওয়ারেন্ট থাকে- তখন গ্রেফতার করতে পারবে আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের। কিন্তু সাধারণত: আইসতাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের স্বারিত ‘এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ওয়ারেন্ট’ দিয়ে গ্রেফতার করে। এর পরে কোর্টে চ্যালেঞ্জ করলে হেরে যায়।

            দ্য সিটি বলছে, ইমিগ্র্যান্টদের রক্ষার্থে ২০২০ সালে আইনকে বিস্তৃত করা হয়। সে সময় গভর্নর ক্যুমো ‘প্রটেক্ট আওয়ার কোর্টসঅ্যাক্ট’ বিলে স্বাক্ষর করেন। এই আইনে আদালত প্রাঙ্গন বা আদালতের ভেতর থেকে কাউকে জুডিশিয়াল ওয়ারেন্ট ছাড়া নিষিদ্ধ করা হয়। এই আইন স্টেটসহ সিটি এবং মিউনিসিপ্যাল কোর্ট হাউজ পর্যন্ত কভার করে। তবে ফেডারেল আদালত এর আওতামুক্ত নয়। গভর্নর ক্যুমো দায়িত্ব গ্রহণের দেড় বছর পরই ‘সেক্যুর কমিউনিটিস’ নামে একটি বিলে স্বাক্ষর করেন, যাতে ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসের কারণে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে বলা হয়।

            আরেকদিকে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামনের ২০শে জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর অবৈধভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ট্রাম্পের বর্ডার জার টম হোম্যান সতর্ক করে বলেছেন, ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ’ প্রোগ্রাম বন্ধ করবে তার প্রশাসন। এমন সব ঘোষণায় আতঙ্কিত হয়ে ট্রাম্পের অভিষেকের আগেই মেক্সিকো-আমেরিকা সীমান্তে বাড়ছে অভিবাসীদের ঢল। এমন চাপ সামাল দিতে সতর্ক অবস্থায় আছে সীমান্তে থাকা কর্মকর্তারাও।

            ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের আগ মুহূর্তে মেক্সিকো লাগোয়া দক্ষিণ সীমান্তে কি পরিমাণ বাড়ছে অভিবাসন প্রত্যাশীদের আগমন- এখনো এই সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্তে যে কোন সময় বাড়তে পারে মেক্সিকান কার্টেলদের দৌরাত্ম্যও।

            তদপুরিও যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তের আশেপাশে ইতোমধ্যে অভিবাসীদের বেশ কিছু দলকে অগ্রসর হতেও দেখা গেছে। মেক্সিকোর টাপাচুলা শহর থেকে সংখ্যায় কয়েক হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী দলবদ্ধ হয়ে বের হলেও ঈগল পাসে আসতে আসতে বিভক্ত হয়ে পড়ছে ১০০ থেকে ২০০ জনের ছোট ছোট দলে।

Share This