সোমবার, ৪ঠা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আমেরিকার ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার প্রস্তাব পেয়েছেন বাংলাদেশের মুমতাহিনা

আমেরিকার ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার  প্রস্তাব পেয়েছেন বাংলাদেশের মুমতাহিনা
Views

জগলুল হুদা।। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা বড়বাড়ির মেয়ে মুমতাহিনা করিম মীম। ছোটবেলা থেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা মীম নিজেকে আস্তে আস্তে গড়ে তুলেছেন। অবশেষে মিলেছে সফলতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হেনড্রিক্স কলেজ থেকে বিশ্ববিখ্যাত ‘হেইস মেমোরিয়াল স্কলারশিপ’ অর্জন করেছেন তিনি।

এটি একটি ফুল-রাইড স্কলারশিপ। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চারজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে এ স্কলারশিপ দেওয়া হয়। এ বছর স্কলারশিপ পাওয়া চারজনের তিনজনই যুক্তরাষ্ট্রের এবং এর বাইরে পুরো বিশ্ব থেকে সুযোগ পাওয়া একমাত্র শিক্ষার্থী মীম। মীমের এ অর্জন উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। গত শুক্রবার (১লা আগস্ট) বিকেলে এ অসাধারণ অর্জনের জন্য সরফভাটা বড়বাড়ির পক্ষ থেকে তাকে বিপুলভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বড়বাড়ির বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সালাম, আরিফুল হাসান চৌধুরী মুরাদ, মঞ্জুর হাসান চৌধুরী, খালেদ হোসেন চৌধুরী রাসেল, নাজিম উদ্দীন চৌধুরী সুজা, করিম চৌধুরী, মো. রাহাত, মো. শিফু, সোহেল রানা প্রমুখ। তবে শুধু হেনড্রিক্স কলেজ নয়; যুক্তরাষ্ট্রের আরও ২৫টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পেয়েছেন মীম।

সব মিলিয়ে তার প্রাপ্ত স্কলারশিপের পরিমাণ প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। কিন্তু মীম জানিয়েছেন যে, তিনি হেনড্রিক্স কলেজেই কম্পিউটার সায়েন্স (ডুয়েল-ইঞ্জিনিয়ারিং) প্রোগ্রামে স্নাতক সম্পন্ন করবেন। জানা গেছে যে, ৫ই আগস্ট তারিখে নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে রওয়ানা দেওয়ার কথা রয়েছে তার। মীমের বাবা ব্যবসায়ী আব্দুল করিম চৌধুরী, মা ইয়াসমিন আকতার গৃহিণী। তিনি চট্টগ্রাম নগরের অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং কাপাসগোলা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। মীম ছোটবেলায় একবার বাবা-মার সঙ্গে বিদেশ যাওয়ার পর থেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। তবে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে মীমকে। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন। নবম শ্রেণিতে গড়ে তোলেন ৬৫ সদস্যের প্রোগ্রামিং ক্লাব।

এই ক্লাবেই শুরু তার নেতৃত্বগুণ আর প্রযুক্তির প্রতি ভালোবাসা। পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জিতেছেন মীম। সবচেয়ে ব্যতিক্রমী কাজ করেন করোনা মহামারির সময়। ঘরে বসেই গড়ে তোলেন একটি মিনি রোবটিক্স ল্যাব। নির্মাণ করেন ‘কিবো’ নামে একটি রোবট যেটি খাবার পরিবেশন করতে পারে। প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম ও সাক্ষাৎকারে অংশ নেন মীম। যাত্রাটা সহজ ছিল না; কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে তিনি তা পূরণ করেছেন। নিজের সংগ্রাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সহশিক্ষা কার্যক্রম আমার পরিচয়ের বড় অংশ। ছোটবেলা থেকেই বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন, গান, প্রোগ্রামিং থেকে শুরু করে বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করেছি। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হয়েছি এবং সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা লাভ করেছি। স্বপ্ন ছিল বিদেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের এবং সেজন্য নিজেকে ধাপে ধাপে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি এবং অবশেষে সফল হতে চলেছি মা-বাবা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণার বদৌলতেই।’ Courtesy: kalbela.

Share This

COMMENTS