শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঊর্ধ্বমুখী আলু-পেঁয়াজ ও সবজির দাম

ঊর্ধ্বমুখী আলু-পেঁয়াজ ও সবজির দাম

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ বৃষ্টির অজুহাতে বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। অন্য দিকে আবারো বেড়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। গত শুক্রবার সকালে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশী জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা। ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৩০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। নতুন আলু ৬৫-৭০ টাকা। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজার তদারকি না থাকায় ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে বিক্রেতারা।

            তবে বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির কারণে আড়তে দাম বাড়তি। তাই খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। আর কিছু দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে আলু পেঁয়াজের দাম। নতুন আলু পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। এখন নতুন নতুন, তাই দাম বেশি।

            বিদেশে পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। গত বৃহস্পতিবার এক সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা হয় গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা আগামী ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। অভ্যন্তরীণ প্রাপ্যতা বৃদ্ধি এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

            ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের (ডিজিএফটি) প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক অন্যান্য দেশকে দেয়া অনুমতির ভিত্তিতে পেঁয়াজ রফতানির অনুমোদন দেয়া হবে।

            প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ হলে পেঁয়াজের চালান রফতানির অনুমতি দেয়া হবে : এই প্রজ্ঞাপন জারি করার আগে যেসব জায়গার জন্য জাহাজে পেঁয়াজ তোলা হয়েছে।

            শিপিং বিল জমা দেয়া হয়েছে; পেঁয়াজ লোড করার জন্য জাহাজ এরইমধ্যে ভারতীয় বন্দরে এসে নোঙর করেছে এবং এই প্রজ্ঞাপনের আগে সেগুলোর রোটেশন নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনের আগে পেঁয়াজ লোড করার জন্য জাহাজের নোঙর/বার্থিং সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিশ্চিত হওয়ার পরেই এ ধরনের জাহাজে লোডিংয়ের অনুমোদন প্রদান করা হবে।

            পেঁয়াজের চালান এই প্রজ্ঞাপনের পূর্বে কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে/যেখানে এই প্রজ্ঞাপন জারির পূর্বে রফতানির জন্য চালান কাস্টমস স্টেশনে প্রবেশ করেছে এবং এই প্রজ্ঞাপন জারির পূর্বে কাস্টমস স্টেশনে প্রবেশ করা পণ্যগুলোর তারিখ ও সময় স্ট্যাম্পিংয়ের যাচাইযোগ্য প্রমাণসহ কাস্টমস স্টেশনের সংশ্লিষ্ট কাস্টোডিয়ানের ইলেকট্রনিক সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে। এর আগে ২০শে আগস্ট ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বিভাগ বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যার ফলে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়।

            পরে ভারত সরকার ২৯শে অক্টোবর থেকে পেঁয়াজ রফতানির জন্য ফ্রি-অন-বোর্ড ভিত্তিতে টন প্রতি ন্যূনতম রফতানি মূল্য (এমইপি) ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে।

এ দিকে বৃষ্টির অজুহাতে কিছুটা বেড়েছে সবজির দাম। বাজারে লম্বা বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, গোল বেগুন ৬০-৮০ টাকা, ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, একই দামে বাঁধাকপি। পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০-৮০ টাকা, মান ও সাইজভেদে লাউ ৪০-৬০ টাকা, কচুরলতি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। শিমের কেজি ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ২০ টাকা কেজির মুলা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা দরে। বেড়েছে কাঁচামরিচের দামও। ৮০ টাকা কেজির কাঁচা করিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। ৬০ টাকা কেজির ধনিয়াপাতা তিনগুণ বেড়ে হয়েছে ১২০-১৩০ টাকায়। রসুন, আদারও দাম বেড়েছে। এ দু’টি পণ্য ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা হয়েছে।

            সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দামও কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি মোটা চাল ২-৩ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৪-৫৫ টাকা। অর্থাৎ নতুন চাল বাজারে এলেও মাসখানেক আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে এখনো।

            আটার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খোলা আটা কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আর প্যাকেট আটার কেজি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। খোলা ময়দার দাম কিছুটা কমেছে। ৬০ টাকা কেজির খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দার দাম কমে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

            খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নেই বললেই চলে। প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে।

            এ দিকে গোশতের দাম কমার প্রভাব পড়েছে মাছের দামেও। গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও কিছুটা কমেছে চাষের মাছের দাম। মাঝারি মানের চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। বড় আকারের চাষের তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, ছোট আকারের ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আর মান ও আকারভেদে চাষের রুই মাছের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। তবে চিংড়ির দাম তেমন কমেনি। প্রতি কেজি চিংড়ি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। শোল মাছের দাম কিছুটা বেড়ে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা হয়েছে। ইলিশ মাছ কেজিপ্রতি দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।

Share This