কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা!
নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিভিন্ন এনজিও থেকে উত্তোলনকৃত ঋণের টাকা (কিস্তি) পরিশোধ করতে না পেরে মিলন বেগম (৫৫) নামে এক বিধবা গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত গৃহবধু পৌর এলাকার সোনাকাটিয়া গ্রামের মৃত বিন্দু মিয়ার স্ত্রী।
নিহতের প্রতিবেশীরা জানান, স্বামীহারা এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জননী মোসাঃ মিলন বেগম নিজ বাড়ীতে প্রায়সময়ই একাকী বসবাস করতেন। নিহতের পুত্রবধু বেশিরভাগ সময়ই তার বাবার বাড়ীতে থাকেন। মিলন বেগম তার একমাত্র মেয়ে মিনারা বেগমের স্বামী (মেয়ের জামাই) শান্তর বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজনে টাকা হাওলাত চাইলে তিনি নিজ নামে চৌদ্দগ্রাম সাজেদা ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও থেকে ৩ লাখ টাকা ও সিসিডি নামে অপর একটি এনজিও থেকে আরো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ তুলে দেন। ঋণ উত্তোলনের শুরুর দিকে মিলন বেগমের মেয়ের জামাই শান্ত কয়েকটি কিস্তি পরিশোধ করলেও পরবর্তীতে সে সময়মত কিস্তি পরিশোধ না করায় এনজিও’র কর্মকর্তাগণ কিস্তি পরিশোধের জন্য ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেন।
গত কয়েকদিন আগে মিলন বেগম মেয়ের জামাইর বাড়ী উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের খামার পদুয়া গ্রামে গেলে বিষয়টি নিয়ে শান্ত ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে বাগবিতন্ডা হয়।
প্রচন্ড হতাশা নিয়ে মিলন বেগম নিজ বাড়ীতে ফিরে আসেন এবং ব্যাপক টেনশনে নির্ঘুম রাত কাটান বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে ধীরে ধীরে তিনি আরো ডিপ্রেশনে পড়ে নিজ ঘরের জানালার গ্রিলের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে প্রতিবেশীরা দেখতে পেয়ে পুলিশের কাছে খবর পৌঁছায়। সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল শেষে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বলেন, ‘আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।’