কুমিল্লায় কোরবানির চাহিদা মিটিয়েও অতিরিক্ত ২৩ হাজার পশু মওজুদ


নিজস্ব প্রতিনিধি\ আসন্ন কোরবানিতে কুমিল্লা জেলায় গবাদিপশুর কোনো সংকট হবে না, বরং চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত ২৩ হাজার ১৬৬টি পশু রয়েছে। জেলার ১৭টি উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণ করেও উদ্বৃত্ত থাকবে বিপুলসংখ্যক পশু।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, এবার কুমিল্লায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত গবাদিপশুর সংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজার ৭৫২টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৮২টি, মহিষ ৬০৮, ছাগল ৫৬ হাজার ৯৪০, ভেড়া ১১ হাজার ৮০৫ ও অন্যান্য পশু ৩১৭টি। চাহিদা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৬টি পশু। ফলে উদ্বৃত্ত থাকছে ২৩ হাজার ১৬৬টি গবাদিপশু।
খামারিরা বলছেন, ভারত থেকে গরু আসার পথ বন্ধ থাকায় এবার স্থানীয় পশুর ভালো দাম পাওয়া যাবে। কুমিল্লার কালিয়াজুরি এলাকার নূরজাহান অ্যাগ্রোর মালিক মো. মনির হোসেন বলেন, ‘আমার খামারে ৫৮টি গরু রয়েছে, এর মধ্যে ১০টি ইতিমধ্যে বিক্রি করেছি। খাদ্যের দাম সহনীয় থাকায় গরুর দামও বেশি রাখছি না।’
বরুড়া উপজেলার আগানগরের বড়হাতুয়া এলাকার হানিফ অ্যাগ্রোর মালিক মো. আবু হানিফ বলেন, ‘প্রতিবছর স্বপ্ন দেখি লাভের মুখ দেখব, কিন্তু চোরাই পশু এসে সেই স্বপ্ন ভেঙে দেয়। এবার প্রশাসনের তৎপরতায় আমরা আশাবাদী।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, ‘এবার গরুর কোনো সংকট হবে না। ঢাকা-চট্টগ্রামের মাঝামাঝি অবস্থান হওয়ায় এখানকার উদ্বৃত্ত পশু অন্য জেলায় সরবরাহ করা যাবে। সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পশু প্রবেশ ঠেকাতে আমরা বিজিবি, পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছি।’
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেন, ‘কোরবানির পশু পরিবহনে যাতে হয়রানি বা চাঁদাবাজি না হয়, সে জন্য আমরা আগেভাগেই নানা পরিকল্পনা নিয়েছি।’
কুমিল্লা ১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মীর আলী এজাজ বলেন, ‘সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। যেখানে নেই, সেখানে টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ভারতীয় পশু প্রবেশে আমরা “জিরো টলারেন্স” নীতিতে কাজ করছি।’
এদিকে জেলার ১৭টি উপজেলার প্রতিটিতেই কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। এর মধ্যে লাকসামে ৩৩ হাজার ৮৬৭টি, নাঙ্গলকোটে ২৭ হাজার ১৭৪, বরুড়ায় ২৩ হাজার ১২, লালমাইয়ে ১৯ হাজার ২৩৮ ও মুরাদনগরে ১৯ হাজার ৪৯টি পশু রয়েছে।