কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম এলাকায় সওজের জায়গা থেকে ১৭টি অবৈধ দোকানঘর উচ্ছেদ
ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার বিজরা বাজারে সড়ক ও জনপথ (সওজ)’র জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত ১৭টি দোকানঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। গত শনিবার (৪ঠা ফেব্রæয়ারী) দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে এ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবদুল হাই সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফারহান রহমান, সওজ কুমিল্লার উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র দাস, লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাহাবুদ্দিন খান, উপপরিদর্শক বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়া, বিজরা বাজার কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন খোকন, সেক্রেটারী সেলিম রেজা।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিজরা বাজার এলাকায় সরকারি খাল ও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন শাসক দলের স্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা ও প্রভাবশালী। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও বিজরা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কুমিল্লা জেলার বৃহত্তর লাকসামের একটি ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা-চাঁদপুর মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত বিজরা বাজার। এ বাজারের বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০০ গজ উত্তরাংশে দক্ষিণে কামাল টাওয়ার পর্যন্ত সরকারি খাল, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) এর জায়গা। অথচ অত্র এলাকার সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম মহোদয়ের নাম ভাঙিয়ে এবং নিজেদের দলের পদ পদবি ব্যবহার করে ক্ষমতার জোর দেখিয়ে সিন্ডিকেট মাধ্যমে অবৈধভাবে ওইসব জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও বাজারে ফুটপাত, ছোট-বড় দোকান-ঘর রদবদলসহ সামজিকভাবে মানুষকে হয়রানি করছে ওইসব কতিপয় ব্যক্তিরা। অভিযোগ উঠেছে, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির, আবদুল মান্নান বাচ্চু ও তার আপন ভাই আওয়ামী লীগের নেতা নাইমুল হোসেন দুলালসহ হাতেগোনা ৫-৬ জন নেতাকর্মীর নেতৃত্বে এসব দোকানঘর নির্মান করা হচ্ছে। গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মহাসড়কের পাশে সওজের ওই সরকারী জায়গা ও খাল দখল করে নির্মানধীন দোকানঘরগুলোতে কয়েকজন শ্রমিক টিনের বেড়া লাগাচ্ছে। আর সেখানে উপস্থিত শাসক দলের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতাসহ বেশ কয়েকজন কাজের তদারকি করছেন। এ সময় দোকান নির্মাণের কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক বলেন, উপজেলার বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের যুবলীগের সহসভাপতি নাইমুল হোসেন দুলাল, ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান বাচ্চু ও একই ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি হুমায়ুন কবিরসহ আরও কয়েকজনে মিলে এসব দোকানঘরগুলো নির্মাণ করাচ্ছেন। এখানে ১৭টি দোকান ঘর হয়েছে। আবার প্রতিটি দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ চলমান রয়েছে।
বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের যুবলীগের সহসভাপতি নাইমুল হোসেন দুলাল ও একই ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির মুঠোফোনে বলেন, ‘সরকারি খাল ও সড়কের জায়গা দখল করিনি, ওইসব জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করছে স্থানীয় বিএনপি নেতা আবু তাহের। আপনি সাংবাদিক, আপনার এতকিছু জেনে কি লাভ! আপনি আপনার জায়গায় থাকেন, আমাদের সঙ্গে ফাইজলামি করবেননা এবং ফোনও করবেন না’।
সরকারি খাল ও সড়কের জায়গা দখল করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজরা বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, যেসব নেতাকর্মী দলের নাম ভাঙিয়ে সরকারী জমি দখল ও সাধারণ মানুষের হয়রানি করে তারা দলের ও দেশের শত্রু। ইউনিয়নের যুবলীগের কোনো নেতা সরকারী সম্পত্তি দখল করলে তার দায়ভার আমরা নেবনা।
বিষয়টি নজরে আসার পর জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগ অভিযানে নামে।
সওজ কুমিল্লার উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র দাস জানান, যানবাহন চলাচল নির্বিঘœ রাখার লক্ষ্যে নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।