চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী ও মেয়রের বাসভবনে হামলা, এমপির অফিসে অগ্নিসংযোগ
চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা চালিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় শনিবার সন্ধ্যায় এ হামলা চালানো হয়।
শিক্ষামন্ত্রীর চশমা হিলের বাসভবনে দুটি গাড়ি ভাঙচুর এবং বাসার ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর হয়। অন্যদিকে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বহদ্দারহাটের বাসায় হামলা ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর চালানো হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল ছুড়ে। এ সময় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। হামলার সময় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী তার বাসভবনে ছিলেন।
এর আগে বিকালে আন্দোলনকারীরা নগরীর লালখানবাজার এলাকায় চট্টগ্রাম-১০ আসনের এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর অফিসেও অগ্নিসংযোগ করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচিতে শনিবার বিকাল তিনটা থেকে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এবং অভিভাবকরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবস্থানকালে এ এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রায় সবার হাতে ছিল লাঠিসোটা। বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করে মিছিল নিয়ে টাইগারপাস, লালখান বাজার হয়ে বহদ্দারহাটের উদ্দেশে ফিরতে থাকেন। মাঝপথে একটি পক্ষ ষোলশহর চশমা হিলে অবস্থিত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা শুরু করেন। গেট ভেঙে প্রবেশ করে তারা পার্কিংয়ে থাকা দুটি গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে কয়েকজন বাসভবনের নিচতলায় ড্রয়িং রুমে ঢুকে ভাঙচুর করেন। এ বাসভবনেই থাকতেন প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ঘটনার সময় তার স্ত্রী ও নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিনসহ পরিবারের সদস্যরা বাসায় ছিলেন।
এর আগে নগরীর লালখান বাজার এলাকায় চট্টগ্রাম-১০ আসনের এমপি মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর অফিসে অগ্নিসংযোগ করেন আন্দোলনকারীরা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ জানান, শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবনের প্রধান গেট ভেঙে প্রবেশ করেন ২০০-২৫০ বিক্ষোভকারী। বাসার সামনে থাকা একটি পাজেরো জিপসহ দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। নিচের তলায় ড্রয়িং রুমেও ভাঙচুর চালায়।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর পিএস আবুল হাশেম জানান, আন্দোলনকারীরা সন্ধ্যায় মেয়র মহোদয়ের বাসায় লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। হামলা চলাকালে মেয়র মহোদয় বাসায় ছিলেন এবং তিনি অক্ষত আছেন বলেও জানান তিনি।