চান্দিনায় খানাখন্দ ভরা সড়কে যান চলাচল ব্যাহত


নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া-নবাবপুর সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত থাকায় বর্তমানে এটি একটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ বেহাল এই সড়কে প্রতিদিন চান্দিনা, কচুয়া ও বরুড়া উপজেলার হাজারো যাত্রী যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। রসুলপুর, মহিচাইল, নবাবপুর বাজার, কাশিমপুর, নিশ্চিন্তপুর, জামিরাপাড়া ও ছেঙ্গাছিয়া এলাকাগুলোর অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। জিরুআইশ এলাকায় একটি কালভার্ট সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ায় সেখানে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে। গত বুধবার (১৮ই জুন) মহিচাইল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বড় একটি গর্তে মালবাহী একটি ট্রাক উল্টে যায় এবং পরিষদের সীমানা প্রাচীরে ধাক্কা দিয়ে সেটি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে। এতে গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং যান চলাচলে বিঘœ ঘটে।
অপরদিকে সড়কের দুরবস্থাকে পুঁজি করে একশ্রেণির অসাধু সিএনজি অটোরিকশা চালক অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, যেখানে ৩০ টাকায় যাওয়া যেত, এখন সেখানে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে। সন্ধ্যার পর এই ভাড়া আরও বেড়ে যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তা ও কৃষকরা জানান, এই সড়কটি একদিকে যেমন সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াতে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কৃষকদের কৃষিপণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন জানান, রাস্তার এই অবস্থা আমাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিতে কঠিন করে তুলেছে। পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে গেছে।
মাধাইয়া-নবাবপুর সড়কের সিএনজিচালক আকাশ, কামাল, রিপনসহ আরও কয়েকজন চালক জানান, রাস্তা ভাঙার কারণে গাড়ি নিয়ে চলাচল করতে কষ্ট হয়। প্রায়ই গর্তে গাড়ি আটকে যায়, গাড়ির পার্টস ভেঙে যায়; এতে যাত্রীদেরও সমস্যা হয়।
ফিরোজ, তরিকুলসহ কয়েকজন যাত্রী জানান, বেহাল সড়কে যাতায়াত তো নিরাপদ নয়ই; সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়াও দিতে হয়। সড়কের দোহাই দিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা আদায় করছেন বিভিন্ন পরিবহনের চালকরা। সন্ধ্যার পর আরও বেড়ে ১০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।
এ বিষয়ে চান্দিনা উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, ২০২৪ সালের বর্ষা শেষে আমরা এই সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শন করে উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাক্কলন তৈরি করে দপ্তরে পাঠিয়েছি। গত ১৭ই জুন দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। মাধাইয়া থেকে রাণীচড়া ব্রিকস ফিল্ড পর্যন্ত প্রায় ৯ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী অর্থবছরের শুরুতেই কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। মহিচাইল ও রসুলপুর বাজার অংশে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ করা হবে।