চান্দিনায় ফসলি জমির মাটি কাটার অপরাধে ৩ লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার চান্দিনায় অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কাটার অপরাধে এক স্কুল শিক্ষককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও একটি ভেকু জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিয়া হোসেন। সহযোগীতায় ছিলেন, চান্দিনা থানা পুলিশ, আনসার ও সঙ্গীয় ফোর্স।
এলাকাবাসি জানায়, চান্দিনা উপজেলার পানিপাড়া গ্রামের নাজমুল মিয়ার ছেলে এমরান পেশায় একজন হাইস্কুলের আরবী শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম হয়ে কিভাবে দীর্ঘদিন যাবত আশপাশের জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করে আসছে? তাকে এলাকার লোকজন বাঁধা দিলেও সে কারো কথায় কর্ণপাত করেনি। উপজেলা প্রশাসন তাকে অনেকবার নিষেধ করার পরও সে মাটি বিক্রি করা বন্ধ করেনি। এর আগে তাকে উপজেলা প্রশাসন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে তারপরও সে অবৈধভাবে অন্যের জমি নষ্ট করে মাটি বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে। পরে উপজেলা প্রশাসন তাকে আটক করে এবং ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে।
জানা গেছে, চান্দিনা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলী মাঠে দেদারসে চলছে অবৈধ মাটি কাটার ভেকু ও ড্রেজার। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইট ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে ও বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন পুকুর ভরাট এর মাধ্যমে কৃষি জমি বিলীন করে যাচ্ছে। যে জমিতে ড্রেজিং করা হয়, তার আশপাশের কৃষি আবাদি জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু অসাধু এসব ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের কারণে সাধারণ কৃষকরা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় বর্তমানে ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। প্রতি বছর ১ শতাংশ কৃষি জমি অবৈধ ড্রেজিংসহ বিভিন্ন কারণে কমে যাচ্ছে। এতে খাদ্য-শস্য ও ফসল উৎপাদনও আনুপাতিক হারে কমছে।
এব্যাপারে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম জানান, চান্দিনায় ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। আগামী বছর ১৩১ হেক্টর কৃষি জমি হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে মাটি বিক্সে বিক্রি ও ড্রেজারের মাধ্যমে মাটি উত্তোলন, মৎস্য প্রকল্প তৈরী, বাড়ি-ঘর ও রাস্তা নির্মাণের কারণে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন জানান, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে মাইজখার ইউনিয়নের পানিপাড়া গ্রামের এমরান নামে এক স্কুল শিক্ষককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও ভেকু মেশিন জব্দ করেছি। অভিযোগ পেলেই আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান করে এসব ভেকু, ড্রেজার ধ্বংস করাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। অবৈধ ড্রেজিংয়ে অভিযান অব্যাহত থাকবে।