শুক্রবার, ১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জাতিসংঘ-বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নে যৌথ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত

জাতিসংঘ-বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নে যৌথ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত
১৫ Views

জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের জন্য যৌথ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশ সরকার এবং জাতিসংঘ কান্ট্রি টিম আজ বৃহস্পতিবার জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির (জেএসসি) দ্বিবার্ষিক বৈঠকে এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।

বৈঠকে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামোর (ইউএনএসডিসিএফ) বাস্তবায়ন মূল্যায়ন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের জাতিসংঘ কান্ট্রি রেজাল্ট রিপোর্ট প্রকাশ এবং আগামী বছরের জন্য কৌশলগত অগ্রাধিকার অনুমোদন করা হয়।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিস গোয়েন লুইসের যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর সিনিয়র প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এক বছরের জন্য বর্ধিতকরণ, এবং জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখার জন্য জেএসসি আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএনএসডিসিএফ (২০২২-২০২৬) এক বছরের সম্প্রসারণের অনুমোদন দেয়।

জেএসসি রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, জলবায়ু-কেন্দ্রিক দুর্যোগ এবং সংস্কার প্রক্রিয়া গতিশীলতা বিবেচনায় রেখে অভিযোজন ক্ষমতা এবং শাসনব্যবস্থা সংস্কার, মানবাধিকার ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জাতিসংঘের সহায়তার বিষয়গুলো তুলে ধরেছে।

জাতিসংঘ ২০২৪ সালে উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করেছে। উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য মসৃণ উত্তরণ কৌশল তৈরিতে সহায়তা, বেসরকারি খাতের সঙ্গে অংশীদারিত্বে ৪ হাজারের  বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ১১৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার উন্নত করতে সহায়তা প্রদান এবং ১১ হাজারের  বেশি তরুণ-তরুণীকে ডিজিটাল দক্ষতা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে।

জাতিসংঘের সহযোগিতার ফলে ৪ কোটি মানুষ সামাজিক সুরক্ষা সেবায় প্রবেশাধিকার পেয়েছে। এর মধ্যে ৫ লাখ ৮০ হাজার শিশু সুরক্ষা কর্মসূচি থেকে উপকৃত হয়েছে। সারা বাংলাদেশে ৫৬ লক্ষ কিশোরীকে জরায়ুমুখের ক্যান্সার থেকে রক্ষা করার জন্য হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের টিকা দেয়া হয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের ৯৩ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

সভায় মিস গোয়েন লুইস বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য বিগত বছরটি চ্যালেঞ্জিং ছিল, যদিও এই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদাবোধ ও দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছে। বাংলাদেশ একটি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং আমরা স্থায়ীভাবে সংস্কার, জলবায়ু অভিঘাত সহিষ্ণুতা, অর্থনৈতিক রূপান্তর, জেন্ডার সমতা এবং সমাজের কেউ যেন পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’

সিদ্দিকী জাতিসংঘের অব্যাহত অংশীদারিত্বের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, সম্প্রসারিত ইউএনএসডিসিএফ এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় করতে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।

সহযোগিতা কাঠামোটি বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জাতিসংঘের পাঁচটি কৌশলগত অগ্রাধিকারের নির্ধারণ করে: এর মধ্যে রয়েছে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সমতার ভিত্তিতে মানব উন্নয়ন ও কল্যাণ, টেকসই, সহনশীল ও উপযোগী পরিবেশ, রূপান্তরমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সুশাসন এবং জেন্ডার সমতা ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা নির্মূল অন্যতম।

Share This