বুধবার, ১১ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জাতীয় নির্বাচন আগামী জুনের মধ্যে—জাপানে ইউনূসের অঙ্গীকার

জাতীয় নির্বাচন আগামী জুনের মধ্যে—জাপানে ইউনূসের অঙ্গীকার
৬০ Views

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “যেকোনো পরিস্থিতিতেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।”

বুধবার টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লীগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।

চার দিনের সরকারি সফরে অধ্যাপক ইউনূস আজ দুপুর ২টা ৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) টোকিও পৌঁছান। সফরকালে তিনি নিক্কেই ফোরামে অংশগ্রহণ ছাড়াও জাপানি নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

তারো আসো, যিনি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং বর্তমানে জেবিপিএফএল-এর সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রচেষ্টায় অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান। তিনি একটি মসৃণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য সময়মতো সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের গুরুত্বও তুলে ধরেন।

অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি বিষয়কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে: সংস্কার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং ঋণ পরিশোধে সরকার ইতোমধ্যেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।

“পূর্ববর্তী সরকার দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে,” বলেন ইউনূস। “ফলে তরুণ সমাজের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারাই আমাকে এই বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে উঠতে আহ্বান জানিয়েছে।”

জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “গত দশ মাসে জাপান আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। এই সফর এক অর্থে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সফর।”

তিনি তারো আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে তিনি নিজের চোখে দেশের পরিবর্তনগুলো প্রত্যক্ষ করতে পারেন।

সাক্ষাতের সময় উপস্থিত জাপানি সংসদ সদস্যরা বলেন, ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। বাংলাদেশ আশা করছে, আগস্টের মধ্যে আলোচনা শেষ করে সেপ্টেম্বরেই চুক্তি স্বাক্ষর করা যাবে।

এই চুক্তি হলে, জাপান হবে বাংলাদেশে ইপিএ স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ।

এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা জাপানি সংসদ সদস্যদের রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে অবহিত করেন এবং এজেন্ডা বাস্তবায়নে জাপানের সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, “এই সংকট অন্যান্য শরণার্থী সমস্যার চেয়ে আলাদা। কারণ রোহিঙ্গারা অন্য কোথাও যেতে চাচ্ছেন না, তারা নিজেদের মাতৃভূমিতে ফেরার দাবি জানাচ্ছেন।”

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন:

  • পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন

  • প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী

  • প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।  সূত্র:   বাসস

Share This