বুধবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নাঙ্গলকোটে একটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রামছাড়া নিরীহ লোকজন

নাঙ্গলকোটে একটি হত্যাকান্ডের  ঘটনায় গ্রামছাড়া নিরীহ লোকজন
Views

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে একটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্কে গ্রামের অধিকাংশ নিরীহ লোকজন ঘরছাড়া হয়ে পড়েছেন। মামলায় গ্রামের নিরীহ লোকদের আসামি করে পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠেছে। অপরদিকে, মুল আসামি ও আশপাশের নিরীহ লোকজনের বাড়িঘরে লুটপাট. অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনায় গ্রামটিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

            ঘটনাটি নাঙ্গলকোটের বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে। ওই গ্রামের সাবেক মেম্বার আলাউদ্দিনকে গত ৩রা আগস্ট মুখোশধারিরা একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে অপহরণ করে। পরে চান্দানাইশ গ্রামের একটি কবরস্থানের পাশ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

            জানা গেছে, ওই গ্রামের শেখ ফরিদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাউদ্দিন মেম্বারের রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। নিহত আলাউদ্দিন মেম্বারের পরিবারের অভিযোগ, শেখ ফরিদ ও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। হত্যাকান্ডের পর আলিয়ারা গ্রামে শেখ ফরিদসহ নিরীহ গ্রামবাসীদের অনেকের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায় আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজন।

            এদিকে আলাউদ্দিন মেম্বার হত্যা মামলার প্রধান আসামি শেখ ফরিদকে ঢাকার মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অপরদিকে, আটক শেখ ফরিদের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে তার ও এলাকার নিরীহ লোকজনের বাড়িঘরে হামলা-লুটপাট ও অগ্নিসংংযোগের অভিযোগে ৭১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৬০ জনের বিরুদ্ধে নাঙ্গলকোট থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় জামিন নিতে গেলে ১৩ জনের নামঞ্জুর করে ১৩ জনকে জেলহাজতে পাঠায় আদালত।

            এদিকে আলাউদ্দিন মেম্বার হত্যা মামলায় নিরীহদের আসামি করে পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। এরমধ্যে দক্ষিণ আলিয়ারা এলাকার মামুন ভূঁইয়া বলেন, ‘হত্যাকান্ডের ঘটনার পর হঠাৎ এক রাতে আমার ঘরে আগুন দেয়া হয়। আমাকে পেটানো হয়, অথচ আমরা এসবের কিছুই জানি না। আমাদেরকে আসামি করে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা চাই প্রকৃত দোষীদের পুলিশ আটক করুক। কিন্তু আমরা হয়রানি হচ্ছি, ঘরছাড়া হয়েছি। এই হত্যাকান্ড নিয়ে যা হচ্ছে, ইটর পুরোটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।’

            একই গ্রামের আরেক ভুক্তভোগী সালে আহমেদ ও কাউছার আক্তার রিংকার বলেন, ‘আমরা নিরাপরাধ, কিন্তু কে শুনবে আমাদের কথা। আমাদেরকে মামলার আসামি করে বাড়িঘর ছাড়া করেছে। গত এক মাসে আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’ বক্সগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, রাজনৈতিক আধিপত্য ও পারিবারিক কোন্দল থেকে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। এই হত্যাকান্ড ঘিরে দু’টি মামলা হয়েছে। আমি চাই মামলা দু’টির সঠিক তদন্ত হোক, কোনো নিরাপরাধ লোক যেনো হয়রানির শিকার না হয়।

            নাঙ্গলকোট থানার ওসি এ কে ফজলুল হক জানান, আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। যারা প্রকৃত অপরাধী, তাদেরকেই গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানি না হয়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রয়েছে।

Share This

COMMENTS