রবিবার, ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নাঙ্গলকোটে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা

Views

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হানগড়া দারুল কোরআন আনোয়ারুল উলুম মাদরাসার প্রধান শিক্ষক আব্দুল মমিন কর্তৃক মাদ্রাসার একাধিক ছাত্রীর যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় ওই মাদরাসা সহকারী শিক্ষক ও মাদরাসা সেক্রেটারি হানগড়া গ্রামের মাওলানা লোকমান হোসাইনের বাড়িতে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হানগড়া গ্রামের আব্দুল মমিন, মাদরাসা সভাপতি একই গ্রামের মাওলানা অহিদ উল্লাহ, শাহ আলম ও আব্দুল গাফফারের নেতৃত্বে ৭০-৮০ জনের সন্ত্রাসীবাহিনী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায় বলে দাবি ভূক্তভোগীদের। এসময় হমলাকারীরা ওই বাড়ির মাওলানা লোকমান হোসাইন, জিয়াউল হক, রফিকুল ইসলাম ও মাহবুবুল হকের ৪টি বসতঘর ভাংচুর করে। এসময় বাড়ি ঘর ভাংচুরের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা রফিকুল ইসলাম ও মাহবুবুল হককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় সোমবার সকালে নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ভূক্তভোগীরা।

            ওই মাদরাসা শিক্ষক ও সেক্রেটারি ভূক্তভোগী মাওলানা লোকমান হোসাইন বলেন, হানগড়া দারুল কোরআন আনোয়ারুল উলুম মাদরাসা প্রধান শিক্ষক আব্দুল মমিন দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসার সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেনীর ছাত্রীদের ক্রমাগত যৌন হয়রানী করে আসছে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। কয়েকদিন পূর্বে স্থানীয় একটি গণমাধ্যম মাদরাসা শিক্ষকসহ এলাকার কয়েকজনের কাছ থেকে এ বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেয়। সাংবাদিক সাক্ষাৎকার নেয়ার পরদিন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ প্রধান শিক্ষকের অনৈতকতার সত্যতা পেয়ে তাকে মাদরাসা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে। রোববার স্থানীয় একটি অনলাইনে প্রধান শিক্ষকের অনৈতিকতা নিয়ে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে। যেহেতু ছাত্রীরা তাদের শ্লিলতাহানীর বিষয়ে আমাদের কাছে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছে তাই আমিও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওই সাক্ষাৎকারে প্রধান শিক্ষক মমিনের বিরুদ্ধে বিচারের দাবি করি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাদরাসা সভাপতি এবং অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার সহযোগীরা মাদরাসার মিটিংয়ের কথা বলে প্রায় ১শ’ লোক জড়ো করে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা আমার ঘরসহ আমাদের বাড়ির ৪টি ঘর ভাংচুর করে ও দুই জনকে পিটিয়ে আহত করে।

            মাদরাসা পরিচালনা কমিটি সভাপতি অভিযুক্ত মাওলানা অহিদ উল্লাহ বলেন, মিটিং শেষে আমি মাদরাসার পাশের দোকানে ছিলাম, হামলার সময় আমি ওই বাড়িতে যাইনি। অভিযুক্ত আব্দুল গাফফার বলেন, আমি হামলাকারীদেরকে ওই বাড়িতে যেতে নিষেধ করেছি কিন্তু তারা কথা শোনেনি। আমি হামলার সাথে সম্পৃক্ত নই।

            স্থানীয় জোড্ডা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আফসার বলেন, হানগড়া গ্রামে একটি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে মাদরাসা কমিটি ও এলাকাবাসী নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় বসবো এর আগে আমি কিছু বলতে পারবো না।

            নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share This

COMMENTS