নাঙ্গলকোটে বিধবা নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন
নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এক বিধবা নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার দৌলখাঁড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত দুলাল মিয়ার স্ত্রী খালেদা বেগম। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও অবস্থার অবনতি হলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি জানান, গত শনিবার (১৪ই সেপ্টেম্বর) আমি বাড়িতে একা ছিলাম। মেয়েরা ছিল কুমিল্লায়। বাড়ির জয়নাল ফরায়েজি ও তার আত্মীয়স্বজনরা আমাদের গাছের জাম্বুরা ও নারকেল পেড়ে নিচ্ছিল। আমি বাধা না দিয়ে এই দৃশ্য ভিডিও করার চেষ্টা করি। এটি তারা দেখে ফেলে। এরপর জয়নাল ফরায়েজি, তার ভাই মিজান, জামাল, মেয়ের জামাই আবদুল কুদ্দুস, ভাতিজা মেহেদী হাসানসহ আরও ১০-১৫জন আমার ওপর হামলা চালায়। প্রথমে তারা আমাকে তাদের ঘরের সামনে নিয়ে লাঠিপেটা করে। তারা সবাই ছিল সঙ্ঘবদ্ধ। আমি চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। একপর্যায়ে তারা আমাকে পুরো উঠানে চেঁচাতে থাকে। চেঁচিয়ে নিয়ে একটি নারকেল গাছের সঙ্গে বাঁধে। সেখানে গলায় চাকু দিয়ে অসংখ্যবার আঘাত করে জয়নালের মেয়ে জামাই আবদুল কুদ্দুস। মারার সময় তারা বলতে থাকে, ‘মামলা যখন খাব, একেবারে মেরেই ফেল।’ এরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। খবর পেয়ে শহর থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর আমার মেয়ে ও মেয়ের সহপাঠীরা এসে পার্শ্ববর্তী আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীরা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। ঘটনার সময় তারা আমার মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। এখনো মুঠোফোনটি ফেরত দেয়নি।
তিনি জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর গত ১১ বছর ধরে জয়নাল আমাকে নানাভাবে নির্যাতন এবং হয়রানি করে আসছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, আহতের পুরো শরীরে অসংখ্য জখম রয়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে অনেক সময় লাগবে।
অভিযুক্ত ডেকোরেটর ব্যবসায়ী জয়নাল ফরায়েজি জানান, আমি ঘটনার সাথে জড়িত না। শুনেছি বাড়িতে মহিলা মহিলা ঝগড়া করেছে।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।