সোমবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নাঙ্গলকোটে শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা

৩১ Views

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ নাঙ্গলকোটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২২ বছর বয়সী এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর চুল কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসময় ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র লুটের অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি।

            গত বৃহস্পতিবার (১৮ই এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার দৌলখাঁড় ইউনিয়নের কান্দাল উত্তর পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে ওই নারীর স্বামী ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে শুক্রবার সকালে থানায় মামলা করেন।

            মামলার প্রেক্ষিতে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান আসামি ইমাম হোসেন ইমনকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইমাম হোসেন একই গ্রামের মৃত ছবর আলীর ছেলে।

            মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দৌলখাঁড় ইউনিয়নের কান্দাল উত্তর পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত ছবর আলীর ছেলে ইমাম হোসেনের পরিবারের সঙ্গে দিদার হোসেনের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এনিয়ে গত জানুয়ারিতে দু’পক্ষে মারামারির ঘটনাও ঘটে। পরে ইমাম হোসেন ওই ধর্ষিত নারীর স্বামীসহ অন্যদের আসামি করে থানায় মামলা করেন। এরমধ্যে গত এক সপ্তাহ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি ফেসবুকের ফেক আইডি ব্যবহার করে ম্যাসেঞ্জার গ্রæপ থেকে ওই গৃহবধূকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। মামলার আরজিতে গৃহবধূ উল্লেখ করেন, তার স্বামী ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করেন। গ্রামের বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি (৭০), কন্যাসন্তানসহ বসবাস করেন তিনি। তাদের সঙ্গে আসামি ইমাম হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলে আসছে। ইমামসহ তার লোকজন গৃহবধূ ও পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। ইমাম হোসেন আগেও বেশ কয়েকবার তাকে ধর্ষণের হুমকি দেয়। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ইমামসহ অজ্ঞাতনামা দু’জন দেশিয় অস্ত্র, লোহার শিকল, তালা-চাবিসহ তাদের বসতঘরের দরজা ভেঙে গৃহবধূর কক্ষে ঢুকে পড়ে। এ সময় ইমাম হোসেন গৃহবধূর শিশুকন্যার জামা তার মুখের ভেতর ঢুকিয়ে দেয় এবং অপর আসামিদের সহযোগিতায় ওড়না দিয়ে তার মুখ বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে লোহার শিকল দিয়ে গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে তালা মেরে দেয়। এরপর ইমাম হোসেনের সহায়তায় মুখোশ পরা এক ব্যক্তি গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। পাশে থাকা অন্যজন গৃহবধূর মাথার চুল কেটে ফেলে। ওই গৃহবধূ মামলার আরজিতে আরও লেখেন, তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের পর আসামিরা ঘরের স্টিলের আলমারিতে থাকা ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকারসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় দলিলপত্র নিয়ে যায়। পরে তার অসুস্থ শাশুড়ি টের পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তারা দ্রæত পালিয়ে যায়।

            নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে ২জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও একজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Share This

COMMENTS