মঙ্গলবার, ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নির্বাচন বানচালের যে কোনো ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

নির্বাচন বানচালের যে কোনো ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় প্রস্তুত সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
৭৮ Views

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচালের ভেতরের বা বাইরের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে।

আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি-সংক্রান্ত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন—

“নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, ভোটদান প্রক্রিয়া, বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে করণীয়— এসব বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন,

“নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর-বাহির থেকে শক্তিশালী চক্র সক্রিয় হতে পারে। হঠাৎ আক্রমণও হতে পারে। এটি হবে একটি চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন, তবে যত বাধাই আসুক, আমাদের তা অতিক্রম করতে হবে।”

প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়— নির্বাচনকালীন পদায়ন, প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক তথ্য পর্যবেক্ষণ।

প্রেস সচিব জানান, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নের কাজ শুরু করেছে। কর্মকর্তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও এলাকার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হবে। যারা নিজ জেলা বা আত্মীয়-পরিজনের এলাকায় প্রার্থী রয়েছেন, তাদের সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। আগের তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কর্মকর্তারাও এবার দায়িত্ব থেকে বিরত থাকবেন।

এ ছাড়া নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দ্রুত পোস্টিং সম্পন্ন করে পর্যাপ্ত সময়ের মধ্যে প্রশিক্ষণ শুরু করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

সভায় নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক তথ্য (disinformation ও misinformation) ঠেকাতে “সেন্ট্রাল ডিসইনফরমেশন মনিটরিং সেল” এবং “সেন্ট্রাল কমিউনিকেশন সেল” গঠনের প্রস্তাব তোলা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন,

“সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনের আগে ও চলাকালে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হতে পারে। এআই-নির্মিত ভুয়া ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করা হতে পারে। অপপ্রচার ছড়ানোর আগেই তা শনাক্ত ও প্রতিহত করতে হবে।”

তিনি আরও নির্দেশ দেন, শুধু শহর নয়, গ্রাম পর্যায়েও যেন ফ্যাক্টচেকিং তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছায়।

প্রেস সচিব জানান, নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রচার কার্যক্রমে তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রতিরক্ষা ও সংহতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী লে. জে. (অব.) আব্দুল হাফিজ, আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ, পিএসও লে. জে. কামরুল হাসান, আইজিপি বাহারুল আলম, র‍্যাব ডিজি এ কে এম শহিদুর রহমান, কোস্টগার্ড ডিজি রিয়ার এডমিরাল জিয়াউল হক, আনসার ডিজি মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এবং এনএসআই, ডিজিএফআই ও এসবির প্রতিনিধিরা।

Share This

COMMENTS