নেতিবাচক কথাবার্তার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক কথাবার্তার কারণে ফ্যাসিবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, কিছু মিডিয়া এই ধরনের বিষয় প্রচার করছে। এটি জনগণের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। আমি তাদের এ ধরনের প্রচারণা চালানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।”
শনিবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ পার্লামেন্ট’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “এবার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি যেন আমরা হাতছাড়া না করি। যদি এই সুযোগ হারিয়ে যায়, তবে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে। এখন যারা রাষ্ট্রের দায়িত্বে আছেন, তাদের আমরা সবাই সমর্থন দিয়েছি, ছাত্ররা এবং রাজনীতিবিদরা একসঙ্গে সমর্থন জানিয়েছেন। ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ যে জঞ্জাল সৃষ্টি করেছে, তা সরিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা তাদের সমর্থন দিয়েছি। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যা তরুণদের স্বপ্ন।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “অনেকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা এত নির্বাচন কেন করেন?’ আমি বরাবরই গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সংস্কার বা উদ্যোগ কখনো সফল হতে পারে না। নির্বাচিত প্রতিনিধি জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ সব কিছু সম্ভব। কিন্তু সমস্যা হলো, দেশে গণতন্ত্রের চর্চা না হওয়ার কারণে একটি স্বৈরাচারী ও কর্তৃত্ববাদী সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। আমরা দ্রুত অসহনশীল হয়ে উঠি। গণতন্ত্র মানেই সহনশীলতা।”
তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারকে সময় দেওয়া উচিত। আমরা তাদের দায়িত্ব দিয়েছি, তারা কাজ করছেন। আমি অবাক হয়ে যাই, এই মিডিয়া! তারা এই সরকারের কোনো সাফল্য দেখতে পায় না। অস্বীকার করার উপায় নেই, সরকার তিন মাসে অনেক কাজ করেছে।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “সরকার সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করেছে, আইন পরিবর্তন করেছে, আইনগুলো নিয়ে কাজ করছে। বেশ কিছু ফ্যাসিবাদের দোসরকে আটক করা হয়েছে এবং বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয় কিছুটা হলেও কাজ করছে, তবে সব কিছু একসঙ্গে সম্ভব নয়।”
এদিনের অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুনির, গণসংহতি আন্দোলনের জেনায়েদ সাকী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের ববি হাজ্জাজ, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজল, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জামিল আহমেদ, জহিরুল আলম, ইয়ুথ ফোরামের মেহেরুন্নেসা হক, সোহান হাফিজ, তানজিনা নওসিন, মনিরুজ্জামান মুনির, মেহেদি হাসান মিঠু, শফিউল কবির, জেরিন আনজুম মৌ, আয়ান আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে নিহত হাফেজ মোহাম্মদ ইমরান এবং আহত হাফেজ তোফায়েল আহমেদের পরিবারকে নাজমুল হক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অর্থ সহযোগিতা এবং যুব সংগঠনগুলোকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।