শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রার্থী অযোগ্য হলে দলের  কিছু করার নেই: কাদের

প্রার্থী অযোগ্য হলে দলের কিছু করার নেই: কাদের

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান অনুযায়ী আওয়ামী লীগ মনোনীত কোনো প্রার্থী অযোগ্য বিবেচিত হলে দলের পক্ষ থেকে কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আপিল করে যদি তারা না টেকে, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা কারও পক্ষে চাপ প্রয়োগ করতে যাবো না। তারা যদি নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান অনুযায়ী বাদ পড়ে তাহলে বাদ পড়বে। আমরা পক্ষপাতিত্ব করবো না। গত সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া প্রমুখ। ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এমনভাবে হওয়া উচিত যেখানে একটি নির্বাচিত সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আরেকটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। এই নীতিতে আমরা আপসহীন। অনির্বাচিত কেউ এসে অস্বাভাবিক সরকার করবে, এটা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

            তিনি বলেন, আজকে বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। এদেশে আমরা দেখে আসছি, যেটা আমাদের অভিজ্ঞতা। আন্দোলনে ব্যর্থ হলে নির্বাচনেও বিজয়ী হওয়া সম্ভব হয় না। যে দল আন্দোলনে হারবে, সেই দল নির্বাচনেও হারবে। আমরা মোটেও চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন নই। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে সারা বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। তাতে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। তারা (বিএনপি-জামায়াত) যত বাধাই সৃষ্টি করুক না কেন মানুষ নির্বাচনমুখী, মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। যারা নির্বাচনে বাধা দেবে জনগণই তাদের বাধা দেবে। ভোটাররাই তাদের প্রতিহত করবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে তারা চোরাগোপ্তা হামলার পথ বেছে নিয়েছে। অগ্নিসন্ত্রাস চালাচ্ছে। নিরীহ বাসের হেলপারকে আগুনে পুড়িয়ে মারছে। ট্রেন-বাসে আগুন দিয়ে অন্ধকারে এসব অপকর্ম তারা করে যাচ্ছে। বিএনপি এ কথা ভালো করেই জানে, বাধা দিয়ে তারা নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে না। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সম্পন্ন হবে। বিএনপি’র নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্য সার্থক হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের বিদেশি বন্ধুরা বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত দেশের কোথাও কোনো সংঘাত সৃষ্টি হয়নি। যেটুকু হচ্ছে সেটা বিএনপি ও তার দোসররা করে যাচ্ছে। যেকোনো নাশকতা পরাজিত হবেই এবং জনগণের শক্তি বিজয়ী হবে। ১০ই ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমাবেশ করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই শহরে কয়েক মাস ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমাবেশ করেছে। কোথাও কোনো সংঘাতের নজির নেই। ১০ তারিখ মানবাধিকার দিবস। ইতিমধ্যে আমরা নির্বাচন কমিশনে অনুমতি চেয়েছি। এখানে কোনো পাল্টাপাল্টির বিষয় নেই। এক সাংবাদিক জানতে চান, প্রায় ২০০টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলীয় শক্ত প্রার্থী রয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কিনা? জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটা বিষয় পরিষ্কার, বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েই এই নির্বাচন বয়কট করেছে। আমরা কি তাদের জোর করে নির্বাচনে আনবো? আর দেশের সংবিধান মেনে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। সেখানে আমাদের ক্ষতি কেন হবে? প্রশ্ন করা হয়, নির্বাচন নিয়ে কোনো চাপ অনুভব করছেন কিনা- জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে তারা বাধা দিতে চাচ্ছে কিন্তু পারছে না। আমাদের বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্পেইন চলছে। নির্বাচন পরিচালনায় বিভিন্ন কমিটি কাজ করছে। তাদের এই নাশকতা আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। নির্বাচনের মাধ্যমে শক্তিশালী বিরোধী দল আসবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন হলেই সেটা পরিষ্কার হবে। যেহেতু সরকারি দল থাকবে, সেহেতু বিরোধী দলও থাকবে। সরকারবিরোধী অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যদি সত্যিকার অর্থে অন্যান্য দল নিজেদের দাঁড় করাতে পারে মজবুত একটা ভিত্তির ওপর। তাহলে পজিশন স্ট্রংগার হবে। শক্ত গণতন্ত্রের জন্য শক্ত বিরোধী দল দরকার। আমরা সেটা চাই। কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প চিন্তা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে তারা আপিল করতে পারে। আপিল করে যদি তারা না টেকে, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা কারও পক্ষে চাপ প্রয়োগ করতে যাবো না। ১৪ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগির এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জোট যেহেতু আছে, কিছু আসন ভাগাভাগি হবেই। তবে বিজয়ী হবে না এমন কোনো প্রার্থীকে আমরা সমর্থন দিতে পারি না। শুধু জোটের দিকে তাকিয়ে নয়, নির্বাচিত হবে- এমন প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া হবে।

Share This