ফেব্রæয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার কোনো শক্তি নেই: প্রেস সচিব


ষ্টাফ রিপোর্টার\ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ফেব্রæয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন প্রতিহত করার কোনো শক্তি নেই। আমরা শক্তভাবে বলছি ফেব্রæয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কোনো শক্তি নাই এটা প্রতিহত করার। গত শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আহত নুরুল হক নুরের বিষয়েও কথা বলেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য নুরকে দেশের বাইরে নেয়া হবে। নুরের ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে সরকারের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সবার জন্য সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য নুরকে দেশের বাইরে নেয়া হবে। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ফোনে নুরের সঙ্গে কথা বলছেন এবং হামলার প্রতি সমবেদনা ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা শক্তভাবে বলছি ফেব্রæয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কোনো শক্তি নাই এটা প্রতিহত করার। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করার মতো পরিবেশ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পরিসংখ্যান নেবেন। গত বছরের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পরিসংখ্যান তুলনা করে দেখবেন। পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে কিনা। আমরা কিন্তু পুলিশকে জানিয়েছি, তারা যেন নিয়মিত পরিসংখ্যান দেয়। আমরা মনে করি, সামনে নির্বাচন হওয়ার মতো যথেষ্ট পরিবেশ আছে। নির্বাচন ফেব্রæয়ারির প্রথমার্ধে হবে। এর আগে গত শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান। নিজের এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, আমাদের সময়ের সাহসী কণ্ঠস্বর গণ অধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুরের ওপর বর্বরোচিত এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, ছাত্রনেতা হিসেবে নুর ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ন্যায়বিচারের দাবিতে তিনি এক প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। শফিকুল আলম বলেন, সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নুর ও তার সংগঠন জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তারা গণতন্ত্র, জবাবদিহি ও মর্যাদার জন্য চলমান লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে নুরকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছিল। এটি শুধু কেবল মৌলিক মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন ছিল না, বরং এটি ছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের হাতে জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার ওপর সরাসরি আঘাত।
ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব আরো বলেন, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোববার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করা। বৈঠকের সময়সূচি অনুযায়ী, বিকেল ৩টায় বিএনপির সঙ্গে, সাড়ে ৪টায় জামায়াতে ইসলামী এবং সন্ধ্যা ৬টায় এনসিপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জাপার কার্যালয়ের সামনে দিয়ে গণ অধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এই ঘটনা চলাকালীন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা হস্তক্ষেপ করেন। পরে গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতিকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর লাঠিপেটায় নুরুল হক নুরসহ তার দলের আরো বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন।