বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আসিয়ান সভাপতির ভূমিকা কাজে লাগাতে চায়: প্রধান উপদেষ্টা


প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে মালয়েশিয়ার প্রভাব, বিশেষ করে আসিয়ানের সভাপতির ভূমিকা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা এবং আসিয়ানে তাদের নেতৃত্বপূর্ণ অবস্থান দেশটিকে একটি বিশেষ স্থানে রেখেছে। এ অভিজ্ঞতা পুরো অঞ্চলের জন্য কার্যকর সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার জাতীয় বার্তা সংস্থা বারনামা’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। কুয়ালালামপুর সফরের সময়েই এই সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে সব ধরনের আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং তার প্রভাব ব্যবহার করবে, যাতে দ্রুত সমাধান পাওয়া যায়।
অধ্যাপক ইউনূস সতর্ক করে বলেন, রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ রোহিঙ্গা সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। ফলে নতুন করে শরণার্থীরা বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন। গত ১৮ মাসে প্রায় দেড় লাখ নতুন রোহিঙ্গা এসেছে, যারা আগে থেকে থাকা ১২ লাখের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা তহবিল বন্ধ করায় সংকট আরও গভীর হয়েছে।
তিনি জানান, আগামী মাসগুলোতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
-
প্রথম সম্মেলন আগস্টের শেষ দিকে কক্সবাজারে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার আট বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে।
-
দ্বিতীয় সম্মেলন সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় নিউইয়র্কে।
-
তৃতীয়টি বছরের শেষে দোহায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে এখনও তেমন অগ্রগতি হয়নি। ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমারের সংঘাত পরিস্থিতি এটি আরও জটিল করে তুলেছে। এই দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকট শুধু বাংলাদেশ নয়, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ আসিয়ান দেশগুলোতেও প্রভাব ফেলছে।
যদিও মালয়েশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ শরণার্থী কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের প্রোটোকলের সদস্য নয়, তবুও মানবিক কারণে দেশটি প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হলে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে, তখন থেকেই সংকটের নতুন অধ্যায় শুরু হয়।