মঙ্গলবার, ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাজারে স্যালাইন সংকট

বাজারে স্যালাইন সংকট

Views

ডেঙ্গু জ্বর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে না। নির্ধারিত শয্যার বাইরে মেঝে কিংবা বারান্দায় মশারি টানিয়ে রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে এক শ্রেণির ওষুধ ব্যবসায়ী নেমেছে অতিরিক্ত মুনাফা সংগ্রহে। বাজারে স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য অতি জরুরি স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে তিন-চার গুণ বেশি দামে। যে স্যালাইনের দাম ছিল ৯০ টাকা, সুযোগ বুঝে তা এখন বিক্রি করা হচ্ছে ৪০০ টাকায়। অথচ সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের বিনা মূল্যে স্যালাইন দেওয়ার কথা।      কিন্তু সেখানেও তা সঠিকভাবে দেয়া হচ্ছে না। কোথাও দেয়া হচ্ছে প্রয়োজনের অর্ধেক, আবার কোথাও মোটেই দেয়াই হচ্ছে না। রোগীর স্বজনদের দোকানে দোকানে ঘুরে স্যালাইন কিনে আনতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রয়োজনের তুলনায় স্যালাইনের সরবরাহ কম পাওয়া যাচ্ছে, তাই রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী দেয়া যাচ্ছে না। শিঘ্রই এই সংকট নিরসন হবে- এমন আশ্বাসও কেউ দিতে পারছেন না।

জানা গেছে, অবস্থা বিবেচনায় একজন রোগীকে দিনে চারটি পর্যন্ত স্যালাইন দিতে হয়। একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে একটি বা দু’টি স্যালাইন। চাহিদার বাকিটা বাইরের ওষুধের দোকান (ফার্মেসি) থেকে রোগীর স্বজনদের কিনে আনতে হচ্ছে। শুধু হাসপাতালে নয়; ওষুধের দোকানেও স্যালাইনের সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তাঁরাও ঠিকমতো স্যালাইন পাচ্ছেন না। আর এই সুযোটাই নিচ্ছেন ওষুধ বিক্রেতারা। একেকটি স্যালাইন তিন-চার গুণ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম সাময়িক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে স্যালাইনের চাহিদা পাঠানো থাকলেও তা আসছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। চাহিদার তুলনায় অর্ধেক স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে। তাই একটু সমস্যা হচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত আরেক খবরে বলা হয়, সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল এবং সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল- এ দু’টির কোনোটিতেই রোগীদের স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সরকারিভাবে স্যালাইনের সরবরাহ বন্ধ থাকায় রোগীদের স্যালাইন দেয়া যাচ্ছে না। এমন অভিযোগ দেশের আরো অনেক স্থান থেকেই পাওয়া যাচ্ছে।

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে স্যালাইনের সংকট হতে পারে, তা আগেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনুমান করা উচিত ছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অক্টোবর পর্যন্ত এমন অবস্থা চলতে পারে। তাই সংকট মোকাবেলায় দ্রæত পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে আমদানির ব্যবস্থা করতে হবে। স্যালাইনসংকটে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হোক, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

Share This