সোমবার, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভোটের আগে মেয়র ও চেয়ারম্যানদের  প্রতি এক নির্বাহী আদেশ জারি ইসি’র

ভোটের আগে মেয়র ও চেয়ারম্যানদের প্রতি এক নির্বাহী আদেশ জারি ইসি’র

Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীরা স্থানীয় সরকারের কোনো সুযোগ-সুবিধা এবং মেয়র, চেয়ারম্যানদের পদমর্যাদা ব্যবহার করতে পারবেন না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দেশের সব মেয়র, চেয়ারম্যানকে এমন নির্দেশনা দিয়ে এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে এ তথ্য জানানো হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম কর্তৃক জারি করা এই নির্বাহী আদেশে ১০টি নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য বলা হয়েছে। একইসঙ্গে নির্দেশনা অমান্য করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারেও  হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হলো:

১) স্ব স্ব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া।

২) নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সময়ে সময়ে যেসব আদেশ বা নির্দেশ জারি করেছে কিংবা করবে, তা প্রতিপালন করা।

৩) নির্বাচনী মিছিল, সভা ও প্রচারণা যাতে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও বিধি অনুযায়ী হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা।

৪) কোনো নির্বাচনী অফিস বা প্রতীক বা পোস্টার নষ্ট করার যে কোনো প্রচেষ্টা রোধে সামাজিক প্রতিরোধ গঠনে সহায়তা করা।

৫) সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ কিংবা ইউনিয়ন পরিষদে এমন কোনো উন্নয়ন স্কিম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে না, যা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থী ভোট প্রাপ্তিতে বা প্রচারণার পক্ষে ব্যবহৃত হতে পারে।

৬) সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অনুদান বা অনুদানের প্রতিশ্রæতি দিতে পারবে না, যা কোনো প্রার্থীর ভোট প্রাপ্তি বা প্রচারণার কাজে প্রভাব বিস্তার করবে।

৭) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো অফিস, যানবাহন এবং অন্যান্য সম্পত্তি কোনো প্রার্থীর নির্বাচন বা প্রচারণার কাজে কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। মাশুল পরিশোধ করেও ব্যক্তিগত কাজে কোনো যানবাহন ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া যাবে না।

৮) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী কাজে বা প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।

৯) ভোটকেন্দ্র নির্মাণসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব কাজে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা প্রয়োজন হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান তা প্রদান করবে।

১০) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের পদমর্যাদা, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না।

            এছাড়া, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা তাদের পদে থেকেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারলেও মেনে চলতে হবে কিছু বিধিনিষেধ।

            জাতীয় নির্বাচনের সময় ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা’ কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না, তার উল্লেখ আছে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায়।

            আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা তাদের সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি বা কর্মকান্ড যোগ করতে পারবেন না। তারা নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্যান্য সরকারি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না এবং এ উদ্দেশ্যে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না।

            আচরণবিধি অনুযায়ী, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হলে তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব করতে পারবেন না বা এসংক্রান্ত সভায় যোগ দিতে পারবেন না। এ ধরনের প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে সভাপতি বা সদস্য হয়ে থাকলে বা তার মনোনীত কোনো ব্যক্তি পর্ষদে থাকলে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে তিনি বা তার মনোনীত ব্যক্তি ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো সভায় সভাপতিত্ব বা অংশ নিতে পারবেন না অথবা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো কাজে জড়িত হতে পারবেন না।

            আচরণবিধিতে আরও আছে, নিজে প্রার্থী বা অন্য কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট না হলে ভোট দেয়া ছাড়া নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ বা ভোট গণনার সময় গণনাকক্ষে প্রবেশ বা উপস্থিত থাকতে পারবেন না।

            সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মধ্যে আছেন প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র।

            নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড দেয়ার বিধান রয়েছে।

Share This

COMMENTS