মনোহরগঞ্জে লাউলহরী-নোয়াপাড়া সড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি!


নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে লাউলহরী-নোয়াপাড়া সড়কের মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সড়ক পাকা করার কাজ শেষ করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এ ব্যাপারে দ্রæত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি তাদের।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নোয়াপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের একটু সামনে আলিমউল্যা মেম্বারের বাড়ির সামনে থেকে খাল পাড়ে শেখ কামালের বাড়ি পর্যন্ত পুরো গ্রামের মানুষ লাউলহরী-নোয়াপাড়া সড়ক দিয়ে পোমগাঁও বাজারে যাতায়াত করে।
সড়কটি দিয়ে দু’টি মাদরাসা ও একটি বিদ্যালয়ের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সড়কটি পাকা করার দাবি ওঠে স্থানীয়দের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রামীণ সড়কটির ৭৭৪ মিটার অংশ পাকা করার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এতে ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ১৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। নিয়ম মেনে দরপত্র আহŸান করা হলে সড়কটির কাজ পায় মেসার্স হোসেন এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকাদার আমির হোসেন সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামের আত্মীয় বলে জানা যায়।
সূত্র জানায়, ৬ মাস আগে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কের এবায়েদ উল্লাহর বাড়িসংলগ্ন অংশে সড়কটির ঠিক মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই কাজ সম্পন্ন করে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে, সড়কের ঠিক মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই কাজ শেষ করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের ভোগান্তি লাঘবে সড়কের কাজ করা হলেও সেই ভোগান্তি রয়েই গেল বলে দাবি তাদের।
ওই এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, এ সড়ক দিয়ে দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এরই মধ্যে একাধিক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সড়ক থেকে বিদ্যুতের খুঁটি দ্রæত সরিয়ে নিলে শঙ্কামুক্ত হবে মানুষ।
ইজি বাইকচালক কবির হোসেন বলেন, ‘এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আমাদের বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করতে হয়। সড়কের ওপর বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় দিনে গাড়ি চালানো গেলেও রাতে তা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। বিশেষ করে বিদ্যুৎ না থাকলে দুর্ঘটনার ভয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। খুঁটিতে ধাক্কা লেগে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হোসেন এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার আমির হোসেন পলাতক রয়েছেন। তিনি সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামের আত্মীয় হওয়ায় বর্তমানে গা-ঢাকা দিয়ে আছেন বলে জানা গেছে। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী শাহ আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত আছি। খুঁটিটি সরাতে বিদ্যুৎ অফিসকে চিঠি দিয়েছি। তারা এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’
কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৪-এর আওতাধীন মনোহরগঞ্জ সাবজোনাল অফিসের ডিজিএম এ কে এম আজাদ বলেন, ‘সড়কের মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। এলজিইডির চিঠি পেলে সেটি সরানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।’