বৃহস্পতিবার, ৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মুরাদনগরের আলোচিত ধর্ষণকান্ডে মামলা প্রত্যাহার করতে চান না ভুক্তভোগী নারী

মুরাদনগরের আলোচিত ধর্ষণকান্ডে মামলা  প্রত্যাহার করতে চান না ভুক্তভোগী নারী
Views

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী। গত সোমবার বিকেলে নিজ বাড়িতে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে গত রোববার তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের মামলাটি প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছিলেন। ভুক্তভোগী নারী বলেন, গ্রামের আবুল কালাম (আবুল) ও মুকুল আমাকে বলেছিল মামলা তুলে নিতে। মামলা তুলে নিলে নাকি দেশটার (এলাকায়) শান্তি হবে। আসামিরা জামিনে এলে আমাদের সমস্যা হবে এবং বাড়িতে থাকতে পারব না। এ কথা বোঝানোর কারণে আমি সাংবাদিকদের বলেছি, মামলা তুলে নেব। আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। আমি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

            এদিকে ভুক্তভোগী নারীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার মোহাম্মদ আলী সুমনসহ ৪ জনের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ। এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, ধর্ষণের শিকার নারীর দায়েরকৃত পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতা সুমনসহ ৪ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড চেয়ে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

            জানা গেছে,  ধর্ষণ মামলার আসামী ফজর আলী অসুস্থ থাকায় তাকে কুমিল্লা পুলিশলাইন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডাক্তারের ছাড়পত্র পেলে যেকোনো সময় তাকে আদালতে তোলা হবে।

            উল্লেখ্য, ঘরে একা থাকার খবর পেয়ে গত বৃহস্কতিবার রাতে ফজর আলী ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে কোনো অঘটন ঘটছে টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে দু’জনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় অতি উৎসাহী কয়েকজন যুবক ওই নারী ও ফজর আলীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পর গত শুক্রবার ফজর আলীকে আসামি করে মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।

            এরপর গত রোববার ভোরে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে পুলিশ ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করে। কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত রোববার সুমনসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন রোববার গ্রেপ্তারকৃত চারজনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মুরানগর থানায় আরো একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। ওই দিন সন্ধ্যায় আসামিদের কুমিল্লা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। তখন বিচারক মোমিনুল ইসলাম আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

            জানা গেছে, কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণ মামলার আসামি ফজর আলী বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে দলটির বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিত। গত বছরের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার সে বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে কোনো দলেই তার পদ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি স্থানীয়রা। তারা বলছেন, ফজর এলাকায় সুবিধাবাদী হিসেবেই পরিচিত। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ফজর আলী মাদক ব্যবসা ও জুয়ার সঙ্গে জড়িত।

Share This

COMMENTS