যুবলীগ-ছাত্রলীগ ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক: রিজভী
সারাদেশকে একটা বিকলাঙ্গ দেশে পরিণত করেছিল শেখ হাসিনা। এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এমন বন্য আইন শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন তার শাসনকালে, একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে দেখলে ভয় পেত, একজন বন্ধু আরেকজন বন্ধুকে দেখলে ভয় পেতে। যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। তারা যেদিক দিয়ে হেঁটে যেত মানুষ সেদিক দিয়ে হেঁটে যেতে ভয় পেত। মানুষ ফিসফিস করে কথা বলতো, নীরবে কথা বলতো। তারা ভাবতো আমাদের কথা যদি ছাত্রলীগ ও যুবলীগ জেনে যায় তাহলে আমাদের বাড়ি-ঘরে আক্রমণ করবে, অথবা পুলিশ ও র্যাব এসে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে চিরদিনের জন্য নিরুদ্দেশ করে দিবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দাতে সাদেক হোসেন খোকা খেলার মাঠে ঔষধ বিতরণ ও চক্ষু সেবা ক্যাম্প উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চক্ষু ক্ষতিগ্রস্তদের এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য বিনামূল্যে চক্ষু সেবা এবং ডাক্তারদের সমন্বয়ে ঔষধ বিতরণ ও চক্ষু সেবা ক্যাম্প করা হয়।
রিজভী বলেন, সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকে যারা এই লুটপাটের সঙ্গে জড়িত তারাই শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ লোক। এস আলম নামে একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নয়টি ব্যাংক দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তিনি নিজেই সেই ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এই ছিল বাংলাদেশের পরিস্থিতি। একইভাবে গত ১৬ বছর শেখ হাসিনা রাজত্ব করেছে। তিনি ভেবেছিলেন, তাকে কেউ বাংলাদেশ থেকে বের করতে পারবে না। তিনি আজীবনের জন্য এখানে ক্ষমতায় থাকবেন। তিনি, তার পুত্র জয়, তার কন্যা পুতুল, তার বোন রেহানা, তারা যেন একটা রাজপরিবার হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের।
রিজভী আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে যে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে শেখ হাসিনা কল্পনাই করতে পারেনি তাকে এতো প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি চিন্তাও করতে পারেননি। তিনি ভেবেছিলেন, তার পাশে আছে ভারত এবং বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র্যাব, পুলিশ। এখানে বেনজীর আছে, মামুন আছে, আরও তার কত পুলিশ অফিসার যারা নির্দেশ দেওয়ার আগেই নিরীহ মানুষদের উপর গুলি চালাতেন, ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা করতেন। বিএনপি ও ছাত্রদলের কত ছেলে যে ক্রসফায়ারে মারা গেছেন, কত ছেলে যে গুম হয়েছেন। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল ইসলাম হিরুর মতো অনেকেই এমপি ছিলেন, তাদের কেউ নিরুদ্দেশ হয়েছে।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ‘চক্ষু সেবা ক্যাম্প’-এর উদ্বোধনের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ডা. এম এ মুহিত, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ প্রমুখ।