
যৌন নিপীড়নের বিচারের দাবিতে চৌদ্দগ্রামে মাদরাসা ছাত্রীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ভাঙ্গাপুষ্কুরুনী আদর্শ বালিকা মহিলা মাদরাসার সহ.সুপার মাওলানা গোলাম সাদিকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সহ.সুপারের বিচারের দাবিতে গত রোববার (২৩শে মার্চ) সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন মাদরাসার ছাত্রীরা।
এদিকে, যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করায় ওই মাদরাসার সুপারকে পদত্যাগে বাধ্য করানোর অভিযোগও উঠেছে ওই সহ-সুপারের বিরুদ্ধে।
মাদরাসার ছাত্রীরা জানান, গত ১৮ই মার্চ কোচিং ক্লাসে দেরিতে আসায় সহ-সুপার গোলাম সাদেক এক ছাত্রীকে নির্জন স্থানে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। বিষয়টি ১৯শে মার্চ ওই ছাত্রী মাদরাসার সুপার মাওলানা জামাল উদ্দিনের নিকট লিখিতভাবে জানান। অভিযোগ পাওয়ার পর সুপার অভিযুক্ত সহ-সুপারকে ডেকে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সহসুপার বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে অফিস কক্ষ থেকে চলে যান। পরবর্তীতে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে অফিস কক্ষে এসে প্রভাব খাটিয়ে মাদরাসার সুপার মো. জামাল উদ্দিনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।
পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সহসুপার গোলাম সাদেকের হাতে একাধিক ছাত্রীর যৌন নিপীড়নের ঘটনা বেরিয়ে আসে। সহ-সুপারের যৌন নিপীড়নের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই প্রতিবাদ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সহসুপারের বিচার ও পদত্যাগী সুপার জামাল উদ্দিনের পূর্ণবহালের দাবিতে রোববার সকালে ওই মাদরাসার ছাত্রীরা মাদরাসা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ক্লাসে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে সহসুপার সাদেক ছাত্রীদের শরীরে হাত দেন। তারা বাঁধা দিলে নানা অযুহাতে তিনি ছাত্রীদের বেত্রাঘাত করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহসুপার মাওলানা গোলাম সাদিকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মাদরাসার সুপার মাওলানা জামাল উদ্দিন বলেন, আমার কাছে এক ছাত্রী সহসুপার গোলাম সাদেকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন। আমি বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের ব্যবস্থা করলে গোলাম সাদেক একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। যদি আমি পদত্যাগ না করি, তারা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে গত ২২শে মার্চ পদত্যাগ করি। এরপরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সহ-সুপার গোলাম সাদেকের বিরুদ্ধে আরো যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠে আসে। সহসুপারের বিচারের দাবীতে শিক্ষার্থীরা মাদরাসা প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একে এম মীর হোসেন বলেন, মাদরাসার সুপার বিষয়টি মোবাইলে জানিয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে এখনও অবগত হইনি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।