রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব চাইবে সংবিধান সংস্কার কমিশন
সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান আলী রিয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়, বরং সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব চাওয়া হবে। রোববার বিকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রিয়াজ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানকে উপেক্ষা করে সংবিধান প্রণয়নের সুযোগ নেই। জনআকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য সংবিধানে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, গণঅভ্যুত্থান না হলে এই কমিশন গঠন সম্ভব হতো না এবং আমরা এখানে উপস্থিতও থাকতে পারতাম না।
সংবিধান প্রণয়নে কমিশনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে আলী রিয়াজ বলেন, “সংবিধান সংস্কার কমিটির সদস্যরা সংবিধান নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। আমি নিজেও প্রায় দুই-আড়াই বছর ধরে সংবিধানটিকে গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করেছি। তাই এই কমিশনকে অভিজ্ঞতাহীন বলার সুযোগ নেই।”
সংসদের মেয়াদ ৪ বছর নির্ধারণ, একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কি না, এসব বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এছাড়া তিনি সংবিধান সংস্কারের ৭টি প্রধান উদ্দেশ্য তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে—১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতিশ্রুত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের লক্ষ্য অর্জন; ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা; রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ; ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা প্রতিরোধ; রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা ও বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ এবং ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা; রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের বিকেন্দ্রীকরণ; এবং রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা।