শুক্রবার, ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন  সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ মাসে সাড়ে ৫ হাজার মৃত্যু

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ মাসে সাড়ে ৫ হাজার মৃত্যু

৪৬ Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৪৮৫টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৫ হাজার ৫৯৮ জন এবং আহত হয়েছে ৯ হাজার ৬০১ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৭৭ জন ও শিশু ৭২৯ জন।

            গত রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানান রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান। সংগঠনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজপোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ও সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

            বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ বছর ২ হাজার ৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে এক হাজার ৯২৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৪.৩৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭.২১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১২১ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২০ শতাংশ।

            যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছে ৬৮৮ জন, অর্থাৎ ১২.২৯ শতাংশ।

এই সময়ে ৮৩টি নৌদুর্ঘটনায় ১২৪ জন নিহত, ১২৫ জন আহত এবং ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছে। ২৪৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২২৭ জন নিহত এবং ২২৩ জন আহত হয়েছে।

            দুর্ঘটনা পর্যালোচনায় সংগঠনটি বলেছে, দেশে বর্তমানে জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়কের দৈর্ঘ্য ২২ হাজার ৪৭৬.২৮ কিলোমিটার। গ্রামীণ সড়ক প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার কিলোমিটার। দেশব্যাপী এসব সড়কে নানা ধরনের যানবাহন যেমন বেড়েছে, তেমনি যানবাহনের গতিও বেড়েছে। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের জন্য যথেষ্ট মাত্রায় প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে গতির প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা ঘটছে। এই অতিরিক্ত গতিই ৮৫ শতাংশ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। যানবাহনের গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের ওপরে প্রতি ৫ কিলোমিটার বৃদ্ধিতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দুই থেকে চার গুণ বৃদ্ধি পায়। সড়ক দুর্ঘটনার ১১টি কারণ উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। এগুলো হলো ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবাদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো,  জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, সড়ক ও সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়া, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

            সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১২টি সুপারিশ দিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সেগুলো হলো দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়ানো, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়ানো, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ।

            এ ছাড়া সড়ক ও সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব করা, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়কপথের ওপর চাপ কমানো, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন এবং সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো।

Share This