বৃহস্পতিবার, ৩১শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

লাকসামবার্তার খেদমত যুগান্তকারী

লাকসামবার্তার খেদমত যুগান্তকারী
১৫৮ Views

            সংবাদপত্র একটি শিল্প। আধুনিক যুগে সাংবাদপত্র হচ্ছে সর্বমহলে যোগাযোগের একটি মাধ্যম। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে অসংখ্য সংবাদপত্র দেশ-জাতি রাষ্ট্রের অপরিসীম খেদমত  করে যাচ্ছে। নিত্য সংবাদপত্র পাঠক এমন নেশাকর লোক তুল্য-যে সকালে প্রাতকর্মের শেষে মেসওয়াক/ব্রাশের পূর্বে সংবাদপত্রটির উপর একটি নজর না দিয়ে অজুও করেন না। মনে প্রাণে সংবাদপত্র হাতে নিয়ে তার শিরোনামের উপর একটা নজর না দিলে মনে হয় রাতের আরামের নিদ্রাটা পূর্নতা ও আসে না। সংবাদপত্র হচ্ছে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতির নিত্য দর্পন। এটা সারাবিশ্বের সকল জনমানুষের চিত্র এককালে। তবে বর্তমান চিত্রটা কিছুটা ভিন্নতর। প্রিন্ট মিড়িয়ার যুগের সাথে বর্তমানে চলছে ইলেকট্রনিক মিডিয়া। তথা ছাপানো কাগজের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বৈদ্যতিক সংবাদপত্র জগৎ। তবে হ্যাঁ, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সুবাধে প্রিন্ট মিডিয়ার চাপ এখন অনেকটাই কমে গেছে। তদোপরি ছাপানো সংবাদপত্র, সাপ্তাহিক, ম্যাগাজিন, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকার তোড়জোড়ও কম নয়।

            বর্তমানে যুগে ছাপানো ও বৈদ্যুতিক পত্র পত্রিকার মাঝেও বাংলাদেশের জাতীয় ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সংখ্যাও কমছে না। সময় ও ক্ষেত্র বিশেষ  পত্রিকার সংখ্যা এবং কলেবর ক্রমশই বেড়েই চলছে। ছাপানো পত্র-পত্রিকার গুরুত্ব এখনও সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কম নয় বরং মান ও কাল বেদে তার প্রয়োজনীয়তা ঢের। তাই বলতে দ্বিধা নেই যে, আধুনিক যুগে বাংলাদেশের শহর-বন্দর-উপজেলা লেভেলে অনেক পত্রিকা নিয়মিত/অনিয়মিত কিংবা ডুমুরে ফুল মার্কা কিছু পত্রিকা মাঝে মধ্যে উকি ঝুঁকি মেরে সমাজে পাঠক কুলের সাথে মিতালীর যোগান দেয়। তবে পত্রিকাগুলোর কম-বেশি এ্যাকশন নেই তা নয়; কোন কোন পত্রিকা তা ছোট বা অখ্যাত হলেও দেশ-জাতি-রাষ্ট্রের কিয়ৎ খেদমত করে যাচ্ছে- তা অস্বিকার করার জোড় নেই। তারমধ্যে মফস্বলের তথা সারা বাংলাদেশ খ্যাত ২য় স্থানের অধীকারী “সাপ্তাহিক লাকসামবার্তা” কে বলা যায় অন্যতম সেরা পত্রিকা। এটার ইতিবৃত্ত দক্ষিন কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালীর সর্ব শ্রেণীর মানুষের সর্বাধিক জানা।

 সাবেক লাকসাম উপজেলা-হালে মনোহরগঞ্জে কালজয়ী ধার্মিক, ধনাঢ্য সমাজ সেবক মরহুম  আইয়ুব আলী ভূঁইয়ার সুযোগ্য সন্তান ছোট কাল থেকেই স্যাহিত্য মনোভাবি মেধাবী ছাত্র শহীদুল্লাহ ভূঁইয়া তার পিতার পরামর্শ ও দোয়া লাভ করে দক্ষিন কুমিল্লা ও নোয়াখালীর লক্ষ লক্ষ মানুষের সুখ-দুঃখ ও সমাজের নানা সমস্যা চিত্র যথাযথ কর্তৃপক্ষের গোচরিভুত করে তাদের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে তার অন্তরে লালিত একটি স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে ১৯৯৭ সালের বেশ পূর্ব থেকেই একটি পত্রিকা প্রকাশের বাসনা। তার ফলশ্রুতিতে লাকসামবার্তার শুভ জন্ম। জন্ম কাল ও আকিকা পর্ব শেষ করেই পাবলিকের নানা সমস্যা প্রকাশ করে পাবলিক ও গর্ভণর এর সাথে সেতুবন্ধন রচিত হয় । পত্রিকার প্রথম প্রকাশ থেকেই লাকসামবার্তা গণমানুষের মন মুকুড়ে স্থান লাভ করে । বলতে গেলে, সর্ব লোকের মন জয় করে একটি আলোকচিত্র রুপে সকলের কাছে সমাদ্রিত হয় পত্রিকাটি।

            সর্বলোকের মন মানসিকতার সাথে একটি মিতালী গড়ে তুলে সকলের প্রিয় পত্রিকা লাকসামবার্তা । এখানে না বললেই নয়- দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক পত্রিকার “আঁতকাজন্ম” লাভ করলেও কতো পত্রিকা নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে প্রাণ হারায়। অবশেষে যথাযথ কর্তৃপক্ষ পত্রিকাগুলোর প্রাণ হরণ করেন অর্থ্যাৎ  ডিক্লারেশন বাতিল করেন। এ ক্ষেত্রে  লাকসামবার্তা সম্পূর্ন স্বতন্ত্র। জন্ম থেকেই এই পর্যন্ত পত্রিকাটি হেঁটে হেঁটে পা পা করে এই পর্যন্ত চলে আসেছে শতবন্ধুর পথ অতিক্রম করে। মহান আল্লাহর খাছ রহমত ও স্বনামধন্য পাঠকের ভালোবাসার ছোঁয়ায় এটি ধাবমান ঘোড়ার মতো সামনের পথে অবিরাম গতিতে চলতে থাকবে।

            পত্রিকাটির সম্পাদক/ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক প্রথম থেকেই একটি অঙ্গিকার নিয়ে পথ চলা শুরু করেছেন, “উষার দুুয়ারে হানি আঘাত- ফুটাবো মোরা রাঙ্গা প্রভাত” তাঁদের এ অঙ্গিকার সকল পাঠক প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছেন। সুতরাং নিঃসংকোচে বলা যায়- সাপ্তাহিক লাকসাম বার্তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। রুদ্ধ হবে না- ইনশাআল্লাহ।

            সাপ্তাহিক লাকসামবার্তা পত্রিকাটি যেকোন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অবয়বে প্রতিনিয়ত ছাপা হচ্ছে। বিশেষ করে, জাতীয় সকল পত্রিকা নিউজ প্রিন্ট্রে মুদ্রিত হলেও এ পত্রিকাটি প্রথম থেকে রঙ্গিন/সাদাকালো ৩২ঢ২২ ইঞ্চি আকারো ছাপা হচ্ছে। যা কোন পাঠক ঠাহর করতে না পেরে জাতীয় পত্রিকা মনে করে পাঠ করে থাকেন। আসল কথা হলো- পত্রিকাটির উদার মানসিকতায় সকল ধর্ম বর্ন ও রাজনৈতিক পরিবেশের সাথে সদ্ভাব রেখে জনকল্যাণে আলোচনা-সমলোচনার কথা  ছেপে যাচ্ছে। এটার এহেন বৈশিষ্ট্য সারাজীবন অব্যাহত  থাকুক- এটাই মহান আল্লাহর কাছে সমবেত প্রার্থনা।

            পরিশেষে পত্রিকাটি সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, প্রকাশক, সংবাদকর্মী ও অগণিত পাঠককুলের প্রতি এই শৈত্য প্রবাহের কন কনে শীত মুহুর্তে ২৯ বছরে পর্দাপনের এই সু-সময়ে সকলের সার্বিক খাইরিয়ত কামনা করছি।

লেখকঃ অধ্যক্ষ, পাটোয়ার ফাজিল মাদ্রাসা,

নাঙ্গালকোট, কুমিল্লা।

মোবাইলঃ ০১৮১৫-৩২১৭৫১

Share This