বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

লাকসামে ইক্বরা মহিলা মাদরাসার ছাত্রী সামিয়া হত্যার মুল রহস্য উদঘাটন এবং ফেসবুকে সংবাদকর্মীদের কটুক্তির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

লাকসামে ইক্বরা মহিলা মাদরাসার ছাত্রী সামিয়া হত্যার মুল রহস্য উদঘাটন এবং  ফেসবুকে সংবাদকর্মীদের কটুক্তির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ
Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ কুমিল্লার লাকসামে ইক্বরা মহিলা মাদরাসা ছাত্রী সামিয়া হত্যাকান্ডের মুল রহস্য উদঘাটন এবং ওই ঘটনা অনুসন্ধানরত স্থানীয় সংবাদকর্মীদেরকে অকথ্য ভাষায় কটুক্তিকারির গ্রেফতার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে সামিয়ার পরিবার, সহপাঠী, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

            গত বৃহস্পতিবার (২৪শে এপ্রিল) সকাল দশটায় আলোচিত মহিলা ইক্বরা মাদরাসার সামনে শুরু হওয়া মানববন্ধন শেষে লাকসাম বাজারে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে লাকসাম প্রেসক্লাব, লাকসাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, লালমাই প্রেসক্লাব, লাকসাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র জনতা, সামিয়ার পরিবার ও সহপাঠীরা।

            উল্লেখ্য, গত ১৭ই এপ্রিল লাকসাম পৌরসভা সংলগ্নে ইকরা মহিলা মাদরাসার পাঁচতলা ভবনের জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে সামিয়ার (১৩) মৃত্যু জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্বেগ হয়েছে। সামিয়ার মা, দাদা ও মামা তাদের এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন।

            এ ঘটনায় সত্যতা অনুসন্ধানে গেলে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয় মাদরাসা প্রধান জামাল উদ্দিন এবং মাদরাসার পরিচালক আজিজুল ইসলামের জামাতা মইনুল ইসলাম জাফরি। তারা সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অশ্লীল ভাষায় কুরুচিপূর্ণ কটুক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করে।

            বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, লাকসাম প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালের কন্ঠ প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান দুলাল, আহবায়ক মনির আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক যায়যায়দিন প্রতিনিধি আরিফুর রহমান স্বপন, সদস্য সচিব বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিনিধি ফারুক আল শারাহ, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডেইলি প্রেজেন্ট টাইম প্রতিনিধি সেলিম চৌধুরী হীরা, দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন, লালমাই প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লার কাগজ প্রতিনিধি প্রদীপ মজুমদার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ।

            নিহত সামিয়ার পরিবারের দাবি, আমরা সামিয়াকে মাদরাসা থেকে বাড়িতে আনতে গেলে মাদরাসার মুহতামিম জামাল উদ্দিন আমাদেরকে উচ্চস্বরে গালিগালাজ ও হেনস্তা করেন এবং মাদরাসার যে দারোয়ান সে আমাদেরকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। পরে দু’জন মহিলা শিক্ষক সামিয়াকে জোরপূর্বক উপরে নিয়ে যায়। এ সময় সামিয়া জোরে চিৎকার করতে দেখা যায়, কিন্তু তারপরেও তাকে ছুটি দেয়া হয়নি।

            সামিয়ার চাচা সাইদুল হাসান জানান, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা বলে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। পাঁচ তলা থেকে একটি মেয়ে রাস্তায় পড়লে তার হাড়-গুড় ভেঙ্গে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হওয়ার কথা, কিন্তু সেখানে আমি তার শরীর থেকে একটু রক্ত পর্যন্ত বের হতে দেখিনি। তিনি আরো জানান, সামিয়া মৃত্যুর আগে বলতে শোনা গেছে বোরকা পরিহিত কোন ব্যক্তি পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে তাকে ফেলে দিয়েছে।

এ সময় বক্তারা বলেন, মাদরাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। জানালার একটি ফাঁক দিয়ে যদি মেয়েটি নিচে পড়ে থাকে তবে গ্রীল মেরামত করা হয়নি কেন? আর ৫ তলা থেকে একটি ১২ বছরের মেয়ে পড়লে তার হাড়গোড় ভেঙ্গে রক্তপাত হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে সামিয়ার এরকম কিছুই ঘটেনি। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। ঘটনা তদন্তে বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করার দাবি করেন বক্তারা। পাশাপাশি অনুসন্ধানরত সংবাদকর্মীদের কটুক্তিকারি মইনুল ইসলাম জাফরিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের আলটিমেটাম দেয়া হয়। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারি দেয় সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নেতারা। এসময় লাকসামের সকল সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

            উল্লেখ থাকে যে, সামিয়া হত্যার যথোপযুক্ত বিচারের দাবীতে লাকসাম এলাকার সাংবাদিক এম. এ কাদের অপু যথেষ্ট ভ‚মিকা পালন করে চলেছেন।

Share This

COMMENTS