বৃহস্পতিবার, ২০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

<span class="entry-title-primary">লালমাইয়ের শীর্ষ ৫ পদে নারী কর্মকর্তা</span> <span class="entry-subtitle">‘নিরাপদ কর্মপরিবেশ পেলে নারীরাও  গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখতে সক্ষম’</span>

লালমাইয়ের শীর্ষ ৫ পদে নারী কর্মকর্তা ‘নিরাপদ কর্মপরিবেশ পেলে নারীরাও গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখতে সক্ষম’

Views

          

  নিজস্ব প্রতিনিধি\ কুমিল্লার লালমাই উপজেলা প্রশাসন, ভুমি প্রশাসন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, প্রাণী সম্পদ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সামলাচ্ছেন নারীরা। বাধা-বিপত্তি ও প্রতিকূলতা পেরিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের প্রয়োজনে পুরুষের মতোই তারা দিন রাত কাজ করছেন। তবে কর্মপরিবেশ আরো নিরাপদ ও সমাজবান্ধব হলে উপজেলার উন্নয়নে অনেক বেশি অবদান রাখতে পারবেন বলে মনে করেন তারা।

            লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও উপজেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) পদ দু’টি সামলাচ্ছেন ৩৪তম বিসিএস -এর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিমাদ্রী খীসা। তিনি গত ২৭শে ফেব্রæয়ারি তৃতীয় নারী ইউএনও হিসেবে এই উপজেলায় যোগদান করেন। এর আগে তিনি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বিদায়ের দিন বোয়ালখালীর সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, ছাত্র, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ কেঁদেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

            লালমাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে রয়েছেন মারজানা আক্তার। তিনি ৩৮তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। উপজেলার পঞ্চম সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে মারজানা আক্তার গত বছরের ২৩শে মে এই উপজেলায় যোগদান করেন। ভূমি সেবায় তাঁর প্রশংসা রয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন গুরুত্ব ইস্যুতে তিনি পুরুষ কর্মকর্তাদের মতোই সকাল সন্ধ্যায় অভিযানে যাচ্ছেন এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন।

            লালমাই উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে গত ১২ই ফেব্রæয়ারি যোগদান করেছেন সাবরিন মাহফুজ। এর আগে এই উপজেলায় প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন উজ্জল চৌধুরী, জাহিদুল ইসলাম ও একদাদুল হক। দীর্ঘ সময় ধরে পুরুষ প্রকৌশলী দায়িত্ব পালন করলেও এবার একজন নারী প্রকৌশলী উপজেলার স্থানীয় সরকার বিভাগ সামলাচ্ছেন। সরকারি গাড়ি না থাকায় ভাড়া গাড়িতেই তিনি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উন্নয়নের বিভিন্ন প্রজেক্ট পরিদর্শনে ছুটছেন।

            এদিকে দীর্ঘসময় ধরে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার পদে রয়েছেন ডা. ফাহমিদা আফরোজ। তিনি ৩৩তম বিসিএস -এর একজন কর্মকর্তা। চতুর্থ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে ২০২২ সালের ৫ই জুলাই থেকে তিনি এই উপজেলায় দায়িত্ব পালন করছেন। যোগদানের হিসেবে তিনি এই উপজেলার সবচেয়ে সিনিয়র ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা।

            অপরদিকে লালমাই উপজেলা কৃষি অফিসার হিসেবে নিয়োজিত আছেন আউলিয়া খাতুন। তিনি ৩৪তম বিসিএস -এর কৃষি ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। উপজেলার সপ্তম কৃষি অফিসার হিসেবে আউলিয়া খাতুন গত ৬ই জানুয়ারি এই উপজেলায় যোগদান করেন।

            তবে নারীদের নিয়ে কাজ করা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার পদে রয়েছেন রফিকুল ইসলাম নামের একজন পুরুষ। ২০১৯ সাল থেকে তিনি এই উপজেলায় দায়িত্ব পালন করছেন।

            লালমাই উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সাবরীন মাহফুজ বলেন, ১৯৬৮ সালে এই দেশ প্রথম নারী প্রকৌশলী পেলেও এখনো সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে নারী প্রকৌশলীর সংখ্যা খুবই কম। মাঠপর্যায়ে নারী প্রকৌশলী আরো অপ্রতুল। বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলে কর্মরত একমাত্র নারী উপজেলা প্রকৗশলী হিসেবে আমি মনে করি নিরাপদ এবং সমতাসূচক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে উপজেলা পর্যায়ে আরো অনেক নারী প্রকৌশলী কাজ করতে আগ্রহী হবে।

            লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা বলেন, নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে নির্বাহী অফিসারের কাজ একই। রাত ৩টায় জরুরি ফোন আসলে দেশ, জনগণ ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে বেরিয়ে পড়তে হয়। তবে নারীদের কর্মপরিবেশ আরো নিরাপদ ও সমাজবান্ধব হলে দেশের উন্নয়নে আমরা নারীরাও সমান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবো।

Share This