বৃহস্পতিবার, ১৩ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

লালমাই উপজেলার ২১টি কমিউনিটি ক্লিনিকের অধিকাংশ ভবনই ঝুঁকিপুর্ন

লালমাই উপজেলার ২১টি কমিউনিটি  ক্লিনিকের অধিকাংশ ভবনই ঝুঁকিপুর্ন
১৯ Views

            নিজস্ব প্রতিনিধি\ গ্রামীন মানুষের সেবা নেয়ার একমাত্র ভরসা কমিউনিটি ক্লিনিক। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলে জ্বর, সর্দি, কাশি, চুলকানির মতো অসুখ দেখা দিলেই ফ্রি চিকিৎসা, পরামর্শ এবং ফ্রিতে ওষুধ নিতে সকলে ছুটে আসেন কমিউনিটি ক্লিনিকে। প্রচলিত গ্রামীণ কথা- সরকারি ওষুধগুলো এক নম্বর। আর তাই বাস্তব জীবনেও বহু পরিবারের ছোটখাটো অসুস্থতার কারণে এই ক্লিনিকগুলো থেকেই ওষুধ নিয়ে থাকেন।

            কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় ২১টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। প্রতিটি ক্লিনিক থেকেই সেবা প্রদান করা হয়। গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে সেবা পেতে ছুটে যায় বহু মানুষ। কাঙ্খিত সেবা পেয়ে খুশিও তাঁরা। কিন্তু বাকই উত্তর ইউনিয়নের ভাবকপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, এটি পরিত্যক্ত ভবন। বৃষ্টির দিনে ক্লিনিকের ভিতরে পানি প্রবেশ করে। ক্লিনিকের বহু স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল, যে কোনো সময়ে ধসেও পড়তে পারে। এমন অবস্থায়ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা বকুল আক্তার। একই রকম অবস্থা প্রেমনল, কনকশ্রী ও চান্দপুর কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর। পাশাপাশি আরও ৯টি ক্লিনিকের অবস্থাও জরাজীর্ণ।

            ভাবকপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা বৃদ্ধা আন্জুমা খাতুন স্বামীকে হারিয়েছেন ১৭ বছর আগে। ২ ছেলে নিয়ে টানাপোড়েনের সংসারে দু’বেলা ভাত খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন। শরীরে অসুস্থতা বোধ হলেই চলে আসেন ক্লিনিকে, যদিও বৃদ্ধা নিজেই বলেন এখানে হাসপাতাল থাকায় প্রাণে বেঁচে আছেন। কিন্তু গরীবের হাসপাতাল হওয়াতে নাকি নতুন বিল্ডিং হয় না। তিনিও দাবি করে ক্লিনিকের জন্য নতুন একটি ছোট ঘর। ছোট্ট শিশু মীরাজ চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে, সে বলে উঠলো, ‘আচ্ছা আংকেল এই হাসপাতালের নাম কি? আর হাসপাতাল হলেতো সামনে নাম লেখা থাকে, এখানে নাম নেই কেন?’ জরাজীর্ণ ক্লিনিকের নামের স্থানটিও ঝরে পড়ে যাওয়াতে উত্তর মিললো না ছোট্ট শিশুর মনে।

            ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা (সিএইচসিপি) বকুল আক্তার বলেন, ‘ক্লিনিকটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। অথচ এখানেই প্রতিদিন মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি।’

            এই বিষয়ে লালমাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক বলেন, ‘লালমাই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২১টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক সেবা প্রদান করে আসছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু বেশিরভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক বহু আগে নির্মিত, যার মধ্যে ৪টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও ৯টি মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সেবা প্রদান করছেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারগন (ঈঐঈচ)। ইতিমধ্যে (ঐঊউ) হেলথ ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্টকে এ ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে।’

Share This