শাহরাস্তিতে বন্যায় সহ¯্রাধিক টিউবওয়েল বিকল
নিজস্ব প্রতিনিধি\ দেশের সবচেয়ে বেশি আর্সেনিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় এবারের বন্যায় ১ হাজার ৬০০ টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিশুদ্ধ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি বাড়ছে আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
বিভিন্ন দপ্তর সূত্র ও পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২ যুগ আগে দেশের সর্বোচ্চ আর্সেনিক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে এই উপজেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এরপর থেকে এখানে আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তেই থাকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ২০১২ সালের পর থেকে সরকারিভাবে কোনো ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে না। সেখানে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৬৯ জন আর্সেনিকোসিস রোগী শনাক্তকরণের হিসাব রয়েছে। তবে বাস্তবে এই সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়ভাবে এ পর্যন্ত উপজেলায় আর্সেনিকোসিস আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস থেকে জানা গেছে, শাহরাস্তি উপজেলায় সরকারিভাবে ৫ হাজার ৭৬৩টি গভীর টিউবওয়েল রয়েছে। এর মধ্যে এবারের বন্যায় ১ হাজার ৬০০ টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে অগভীর টিউবওয়েল রয়েছে কয়েক হাজার। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ না হলে আর্সেনিক রোগীসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে শঙ্কা এলাকাবাসীর।
উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের বেততলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আকতার হোসেন শিহাব বলেন, বন্যায় এলাকায় বেশির ভাগ টিউবওয়েল ডুবে গেছে। পানি নেমে গেলেও এগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এখানে আগে থেকেই পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে, যে কারণে আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েলগুলো পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় সুপেয় পানির সংকট প্রকট হয়েছে।
চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের কোঁয়ার গ্রামের যুবক শান্ত হাসান বলেন, বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও লোকজন ভয়ে ডুবে যাওয়া টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করছে না।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম বলেন, বিশুদ্ধ পানির সংকট কমাতে প্রায় ১৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। অতি দ্রæত ইউনিসেফের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত টিউবওয়েলগুলোতে হাইজিন কিট দিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. সারোয়ার হোসেন বলেন, বন্যায় স্বাস্থ্যসচেতনতায় কাজ করা মেডিকেল টিমের সদস্যরা আর্সেনিকসহ পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।