বৃহস্পতিবার, ২৮শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিশু সায়মন হত্যাঃ পরকীয়াযুগলের প্রেমিকের মৃত্যুদন্ড প্রেমিকার যাবজ্জীবন কারাদন্ড

শিশু সায়মন হত্যাঃ পরকীয়াযুগলের প্রেমিকের  মৃত্যুদন্ড প্রেমিকার যাবজ্জীবন কারাদন্ড
২৬ Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ পরকীয়ায় জড়িত চাচীকে পরপুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় ৭ বছর বয়সী শিশু সায়মন আরিয়ানকে হত্যার দায়ে পরকীয়া যুগলের একজনকে মৃত্যুদন্ড ও অপরজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

            দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বিরামকান্দি গ্রামের ফেলু পাঠানের পুত্র বিল­াল পাঠান ও একই উপজেলার কড়াকান্দি গ্রামের জামাল মিয়ার স্ত্রী শেফালী আক্তার। গত বুধবার (২০শে আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।

            মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি বিল­াল পাঠানের সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত নারী শেফালী আক্তারের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই নারী হত্যার শিকার শিশু সায়মন আরিয়ানের চাচী।

            মামলা সূত্রে জানা যায়,  বিল­াল পাঠান ও শেফালী বেগম পরকীয়া প্রেমে আসক্ত ছিলেন। বিল­াল পাঠানের স্ত্রীর বড় বোন ছিলেন শেফালী বেগম। ২০২৩ সালের ১৬ই আগস্ট বিকালে বিল­াল পাঠান তার স্ত্রীর বড় বোন শেফালী বেগমের বাড়িতে যান। এক পর্যায়ে দু’জনেই  অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েন। এরিমধ্যে সায়মন খেলার চলে চাচীর ঘরে প্রবেশ করে দু’জনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে সে চিৎকার শুরু করে। এ সময় বিল­াল পাঠান সায়মনের গলা মুখ চেপে ধরে। পরে শেফালী বেগম রান্নাঘর থেকে ছোরা নিয়ে আসে এবং দু’জনে মিলে সায়মনকে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে রাত ১২টায় কড়িকান্দি উত্তর পাড়ায় বালুর মাঠের কাঁশবনের ঝোপে ফেলে আসে।

            এদিকে সায়মনের মা খোরশেদা আক্তার ও পরিবারের অন্যরা সন্ধ্যা হয়ে গেলেও সায়মন ঘরে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি করে। পরে না পেয়ে মাইকে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করেন। ১৮ই আগস্ট তিতাস থানায় সাধারণ ডাইরী করেন। ১৯শে আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই গ্রামের ওয়াসিম বেপারী কলাকান্দি বালুর মাঠের পশ্চিমাংশে ঝোপের ভেতর সায়মনের লাশ দেখতে পেয়ে শোর চিৎকার শুরু করেন। পরে তিতাস থানায় জানানো হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

 এ ঘটনায় সায়মনের মা খোরশেদা আক্তার বাদী হয়ে শেফালী বেগম এবং অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে বিল­াল পাঠানের নাম উঠে আসে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে। আসামি শেফালী বেগম ও বিল­াল পাঠান গ্রেফতারের পর আদালতে এ ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

            পরবর্তীতে অভিযোগপত্র দায়ের ও শুনানি এবং ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার (২০শে আগস্ট) আসামি বিল­াল পাঠানকে মৃত্যুদন্ড এবং শিশু সায়মনের চাচী শেফালী বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত।

Share This