শুক্রবার, ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

<span class="entry-title-primary">সড়ক দুর্ঘটনায় আহতরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত</span> <span class="entry-subtitle">রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ১৮ বছরেও পুরোপুরি চালু হয়নি ৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত কুমিল্লাা ট্রমা সেন্টার</span>

সড়ক দুর্ঘটনায় আহতরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ১৮ বছরেও পুরোপুরি চালু হয়নি ৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত কুমিল্লাা ট্রমা সেন্টার

৬০ Views

            ষ্টাফ রিপোর্টার\ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসা দেয়ার লক্ষ্যে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি শহীদনগর এলাকায় মহাসড়কের পাশে নির্মাণ করা হয় ট্রমা সেন্টার। দীর্ঘ ১৮ বছর পার হয়ে গেলেও ট্রমা সেন্টারটির স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু হয়নি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ কুমিল্লার বিভিন্ন সড়কে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসা দিতে স্থাপিত এই বিশেষায়িত হাসপাতালটি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এতে করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতরা বঞ্চিত রয়েছেন জরুরি চিকিৎসা সেবা থেকে।

            জানা গেছে, ২০০৬ সালের ৬ই অক্টোবর সেন্টারটির উদ্বোধন করেন বিগত বিএনপি জোট সরকারের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। উদ্বোধনের পর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে কয়েক মাস পর সেন্টারটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী আ.ন.ম রুহুল হক ২০১০ সালের ৩০শে এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ট্রমা সেন্টারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে আউটডোরে সীমিত আকারে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা।

            সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রমা সেন্টারটির ৩ তলা ভবনের নিচতলায় জরুরি বিভাগ ও চিকিৎসক-নার্সদের কক্ষেই চলছে সেবা কার্যক্রম। বাকি পুরো ভবনটি ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দোতলা এবং ৩ তলায় তৎকালীন সময়ের আধুনিক কাঠামোতে কক্ষগুলো নির্মাণ হলেও এখন খসে পড়ছে পলেস্তারা। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় দরজা-জানালা ভেঙ্গে গেছে আবার কোথাও ধরেছে মরিচা।

            স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে দীর্ঘ ১৮ বছর আলোর মুখ দেখেনি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেন্টারটি। অপারেশন থিয়েটার, আইসিইউ, সিসিইউ, রোগী থাকার মত সকল ব্যবস্থাসহ ৩ তলা এই ভবন থাকলেও সবই পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। যা ব্যবহার না থাকায় ট্রমা সেন্টারের অবকাঠামো নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানায়, ট্রমা সেন্টারটি কার্যক্রম চালু না হওয়ায় সড়কে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। আশেপাশে উন্নতমানের হাসপাতাল না থাকায় ঢাকা অথবা কুমিল্লায় নিয়ে যেতে হয়। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, সুন্দর একটি ভবন ছাড়া তারা আর কিছুই পায়নি। তারা আরও বলেন, বিএনপি আমলে নির্মিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ আমলে এই হাসপাতালটি কারো সুনজরে পড়েনি।

            মানবিক দাউদকান্দি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক রুবেল বলেন, রাজনীতি থাকবে রাজনীতির জায়গায়, কিন্তু জনগণের অর্থে নির্মিত সেবা প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ থাকবে, এটা হতে পারে না। আমরা চাই যত দ্রæত সম্ভব হাসপাতালটি চালু করা হোক। এই মুহূর্তে অন্তর্বতী সরকারের পক্ষে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব।

            স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ কুমিল্লার বিভিন্ন সড়কে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসা দিতে ট্রমা সেন্টারটি গড়ে ওঠে। গণপূর্ত বিভাগের অর্থায়নে ৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সেন্টারটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে উদ্বোধন হলেও আজও চালু করা সম্ভব হয়নি। অথচ মহাসড়কে প্রায় প্রতিদিনই কুমিল্লার কোনো না কোনো স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা হলে স্থানীয় ডাক্তাররা দ্রæত ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন।           দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হাবিবুর রহমান জানান, অপারেশন থিয়েটার, আইসিইউ, সিসিইউ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকা ট্রমা সেন্টারটি চালু করা যাচ্ছে না। তবে আমরা একটি তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সরকার পদক্ষেপ দিলে দুর্ঘটনায় আহতরা ঢাকায় না গিয়ে এখানে উন্নত সেবা পেতে পারে।

Share This