সরকারি খাল ভরাট করে দোকানপাট-বাড়ি নির্মান
এ বি এম আতিকুর রহমান বাশার\ কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ৪ নম্বর সুবিল ইউনিয়নের ওয়াহেদপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার সামনের ‘মনুরাম’ খাল ভরাট করে বাড়ি, সড়ক ও দোকানপাট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে সুবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী শাহ আলমের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা জানায়, ওয়াহেদপুর গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নারায়ণপুর মরা নদীর সংযোগ খালটি ওয়াহেদপুর মাদরাসা ঘেঁষে মনুরাম খালের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সরেজমিনে ওয়াহেদপুর গিয়ে বিষয়টি দেখা গেছে। অভিযুক্ত কাজী শাহ আলম ওয়াহেদপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসারও সভাপতি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওয়াহেদপুর-রসুলপুর সড়কের নিচ দিয়ে মনুরাম খালের সঙ্গে সংযোগস্থলে একটি কালভার্ট ছিল, যা কাজী শাহ আলম ভরাট করে বাড়ি ও বাড়ি যাওয়ার সড়ক নির্মাণ করেছেন। এতে বর্ষাকালে সড়কের পশ্চিমাঞ্চলের পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ওই এলাকার বাড়িঘর ও আবাদি জমি তলিয়ে যায়। এতে ফসলের যেমন ক্ষতি হয়, তেমন বাড়ি-ঘরের বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে যায়।
ওয়াহেদপুর গ্রামের দফাদার (অব.) রাজা মিয়া বলেন, ‘নারায়ণপুর মরা নদীর সংযোগ খালটি ওয়াহেদপুর-রসুলপুর সড়কের কাজী শাহ আলমের বাড়ির সামনে পাকা সড়কের বক্স কালভার্টটি মনুরাম খালের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ওই বক্স কালভার্টসহ খালটি ভরাট করে কাজী শাহ আলম নিজের বাড়ি, বাড়িতে ঢোকার সড়ক নির্মাণ করেন। যাতে সড়কের পশ্চিম পাশের বাড়ি-ঘর ও আবাদি জমি বর্ষাকালে তলিয়ে আমরা ভোগান্তিতে থাকি।’
সুবিল ইউপির সাবেক মেম্বার মহিউদ্দিন মজনু বলেন, ‘মনুরাম খালের মাদরাসার সামনের অংশ ভরাট করে প্রশাসনের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে প্রভাব খাটিয়ে মার্কেট নির্মাণ করে ফেলেন।’
ওয়াহেদপুর গ্রামের সুকুমার রায় বলেন, ‘খাল ভরাটের কারণে বর্ষা মৌসুমে রায়বাড়ি, কামালের বাড়ি, মালু মিয়ার বাড়ি, হাজী নাজীর আলীর বাড়িসহ পুরো এলাকার আবাদি জমি তলিয়ে যায়। উপজেলা প্রশাসনের নিকট একাধিক অভিযোগপত্র দিলেও পয়োনিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা করে দেননি।’
সুবিল ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার মুকুল ভূঁইয়া খাল ভরাট করে বাড়ি, সড়ক ও মার্কেট নির্মাণের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী মনুরাম খালের সংযোগটি খনন করে সংস্কার না করলে এ এলাকার অসংখ্য বাড়ি-ঘর, আবাদি জমি স্থায়ীভাবে পানির নিচে তলিয়ে যাবে। খাল ভরাটে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
ওয়াহেদপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাদরাসার সভাপতি কাজী শাহ আলম মাদরাসার অনুমতি কিংবা মাদরাসার অর্থায়নে খালের ওপর মার্কেট করেননি।’
অভিযুক্ত কাজী শাহ আলম বলেন, ‘আমি খাল ভরাট করিনি। খালের পাশে পিলার দিয়ে আমার ব্যক্তিগত টাকায় মার্কেট নির্মাণ করেছি। এ মার্কেটের আয় মাদরাসার উন্নয়নে ব্যয় করব।’
দেবীদ্বার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রায়হানুল ইসলাম বলেন, ‘খাল ভরাট করে বাড়ি, সড়ক এবং মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
-সৌজন্যেঃ কালের কণ্ঠ